বেদ, ভাগবত, উপনিষদ, আগম ৷
‘পূর্ণতত্ত্ব’ যাঁরে কহে, নাহি যাঁর সম ৷৷ ২৪ ৷৷
ঋক্সংহিতায় (১।২২।২০) “তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ। দিবীব চক্ষুরাততম্” ইত্যাদি । (ভাঃ ১১।৩।৩৪-৩৫) “নারায়ণাভিধানস্য ব্ৰহ্মণঃ পরমাত্মনঃ । নিষ্ঠামর্হথ নো বক্তুং যূয়ং হি ব্রহ্মবিত্তমাঃ।। স্থিত্যুদ্ভবপ্রলয়হেতুরহেতুরস্য, যৎ স্বপ্নজাগর-সুষুপ্তিষু সদ্বহিশ্চ । দেহেন্দ্ৰিয়াসু হৃদয়ানি চরন্তি যেন, সঞ্জীবিতানি তদবেহি পরং নরেন্দ্র।।” নারায়ণাথর্ব্বশির-উপনিষদে —“নারায়ণাদেব সমুৎপদ্যন্তে নারায়ণাৎ প্ৰবৰ্ত্তন্তে নারায়ণে প্ৰলীয়ন্তে । অথ নিত্যো নারায়ণঃ । নারায়ণ এবেদং সৰ্ব্বং যদ্ভূতং যচ্চ ভব্যম্। শুদ্ধো দেব একো নারায়ণো ন দ্বিতীয়োঽস্তি কশ্চিৎ।” নারায়ণোপনিষদে—“যতঃ প্রসূতা জগতঃ প্রসূতা।” হয়শীর্ষপঞ্চরাত্রে—“পরমাত্মা হরির্দেবঃ ।” *[1]
[1] * ঋকসংহিতা—আকাশে সূর্য্য উদিত হইলে চক্ষু যেরূপ সৰ্ব্বত্র দৃষ্টিপাতে সমর্থ হয়, তদ্রপ জ্ঞানিগণ সেই শ্রীবিষ্ণুর পরমপদ সদা প্রত্যক্ষ করেন। শ্রীমদ্ভাগবত-মহারাজ নিমির প্রশ্ন,—“হে মুনিগণ! আপনারা যেহেতু ব্রহ্মজ্ঞশ্রেষ্ঠ, সেহেতু নারায়ণ-শব্দ-অভিহিত বস্তু, ব্রহ্ম ও পরমাত্মার স্বরূপ আমাদের নিকট বর্ণনে সমর্থ।' ঋষি পিপ্পলায়ন-কৃত উত্তর,—“হে রাজন! যিনি এই বিশ্বের সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়ের হেতু, কিন্তু স্বয়ং হেতুরহিত, তিনি নারায়ণ; যিনি স্বপ্ন-জাগর-সুষুপ্তি ও সমাধি প্রভৃতি অবস্থায় সর্বত্র সরূপে অনুবর্তমান, তিনি ব্রহ্মা ; দেহ, ইন্দ্রিয়, প্রাণ, হৃদয় যাঁহার বলে সঞ্জীবিত হইয়া কাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হয়, তিনি পরমাত্মা রূপে জ্ঞাতব্য।অথৰ্ব্ববেদীয় শ্রীনারায়ণােপনিষদ—শ্রীনারায়ণ হইতেই সকল কিছু সমুদ্ভূত হয়, তাঁহা হইতেই প্রবর্তিত (পরিচালিত) হয় এবং তাঁহাতেই বিলীন হয়। অতএব নারায়ণ নিত্য। এই সমগ্র বিশ্ব—যাহা হইয়াছে ও হইবে, তাহা সমস্তই নারায়ণাত্মক। বিশুদ্ধসত্ত্বময় দেবতা নারায়ণই এক বা অদ্বিতীয়—অপর কেহ দ্বিতীয় নাই।