পঞ্চতত্ত্বের স্বরূপ ও তাঁহাদের প্রণাম :—
পঞ্চতত্ত্বাত্মকং কৃষ্ণং ভক্তরূপস্বরূপকম্ ।
ভক্তাবতারং ভক্তাখ্যং নমামি ভক্তশক্তিকম্ ॥ ১৪ ॥
শ্রীচৈতন্য নিত্যানন্দ, অদ্বৈত প্রেমের কন্দ,
হরিদাস স্বরূপ-গোঁসাঞি।
শ্রীবংশীবদনানন্দ, সার্বভৌম রামানন্দ,
রূপ-সনাতন দুই ভাই ॥
শ্রীজীব, গোপালভট্ট, দাসরঘুনাথ ভট্ট,
শিবানন্দ, কবিকর্ণপূর।
নরোত্তম, শ্রীনিবাস, রামচন্দ্র, কৃষ্ণদাস,
বলদেব, চক্রবর্তীধুর ॥
ঈশ-ঈশভক্তগণে, প্রণমিয়া সযতনে,
‘অমৃতপ্রবাহভাষ্য’ সার।
চৈতন্যচরিতামৃত, করিলাম সুবিস্তৃত,
ভক্তবৃন্দ, করহ বিচার ॥
গৌরকথা-পয়োরাশি, কৃষ্ণদাস তাহে ভাসি,
আনিয়াছে অমৃতের ধার।
সেই কাব্য-সুধা-পানে, বৈষ্ণব শীতলপ্রাণে,
আরো পিতে চাহে বার বার ॥
এই দীন-অকিঞ্চনে, আজ্ঞা দিল সৰ্ব্বজনে,
ভাষ্য তার করিতে রচন।
সাধু-আজ্ঞা শিরে ধরি’, যত্নে এই ভাষ্য করি,
সাধু-করে করিনু অর্পণ ॥
মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য, রাধাকৃষ্ণ— নহে অন্য,
রূপানুগ-জনের জীবন।
বিশ্বম্ভর-প্রিয়ঙ্কর, শ্রীস্বরূপ-দামোদর,
তাঁর মিত্র রূপ-সনাতন ॥
রূপপ্রিয় মহাজন, রঘুনাথ ভক্তধন,
তাঁর প্রিয় কবি-কৃষ্ণদাস ।
কৃষ্ণদাস-প্রিয়বর, নরোত্তম সেবাপর,
যাঁর পদ বিশ্বনাথ-আশ ॥
ভক্তরাজ বিশ্বনাথ, তাঁহে শ্রদ্ধ জগন্নাথ,
তাঁর প্রিয় ভকতিবিনোদ।
মহাভাগবতবর, শ্রীগৌরকিশোরবর,
হরিভজনেতে যাঁর মোদ ॥
এই সব হরিজন, গৌরাঙ্গের নিজজন,
তাঁদের উচ্ছিষ্টে যার কাম ।
শ্রীবার্ষভানবী বরা, সদা সেব্য-সেবাপরা,
তাঁহার দয়িত-দাস নাম ॥
হরিজন-সেবা-আশে, ভক্তিবৃদ্ধি-অভিলাষে,
প্রবাহভাষ্যের অনুগত।
গৌরজন-শাস্ত্র দেখি, সেই অনুসারে লিখি,
‘অনুভাষ্য’ রূপানুগমত ॥
গ্রন্থের মঙ্গলাচরণের উদ্দেশে গ্রন্থকার আদিতে চৌদ্দটী শ্লোক লিখিয়াছেন, তাঁজহাতেই গ্রন্থপ্রতিপাদ্য বস্তুর নির্দেশ, শ্রোতৃগণকে আশীৰ্বাদ ও নমস্কার করিয়াছেন। আদিলীলার প্রথম সপ্ত পরিচ্ছেদে ক্রমশঃ ইহাই বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যাত হইয়াছে ।