ভাগবত পড়িয়াও কারো বুদ্ধিনাশ।
নিত্যানন্দ-নিন্দা করে যাইবেক নাশ ॥
অনেকে শ্রীব্রহ্ম-মাধ্বগৌড়ীয়ের আনুগত্যে শ্রীমদ্ভাগবত আলোচনা না করিয়া বিদ্যা, ধন, রূপ যশঃ ও কুল-মানের লালসায় প্রমত্ত জনের নিকট ভাগবত পাঠ করিয়া ভক্তিবিদ্বেষমূলক বিচার অবলম্বন করেন।শ্রীনিত্যানন্দস্বরূপের আনুগত্যাভাবে সাত্ত্বিক অধিষ্ঠানে চৈতন্যদাস্য হারাইয়া তাঁহারা বৈষ্ণব-গুরুর অসম্মান করিয়া বসেন । তাঁহার ফলে তাঁহাদের ভক্তিহীনতা প্রকাশিত হয় ও বৈষ্ণবের উপদেশক বলিয়া অহঙ্কার জন্মে। তাঁহারা সর্বভূতে ভগবদ্ভাবদর্শনাভাবে বিশ্বকে নিরানন্দময় দর্শন করেন; তখন অহঙ্কার পোষণ করিতে গিয়া হিংসামূলে আপনাকে ভাগবতের উপদেশক, মন্ত্রদাতা-গুরু-বেষে দীক্ষা-ছলনা প্রভৃতি ভক্তিহীন কার্য-সমূহের আবাহন করিয়া বসেন। কিন্তু বৈষ্ণব-গুরুর নিকট শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ করিলে স্বাভাবিক দৈন্যবশে এবং নিজের তৃণাদপি সুনীচতা উপলব্ধিক্রমে শ্রীমদ্ভাগবত-পাঠ এবং উপদেশদানে যোগ্যতা হয়। শ্রীচৈতন্য-করুণা কটাক্ষ কণ-লব্ধ জীব বিশ্ব নিত্যানন্দময় দর্শন করেন। নিত্য বৈষ্ণবদাস ব্যতীত শ্রীমদ্ভাগবতের অধ্যাপকতা অপরাবিদ্যায় পারঙ্গতজনগণের পক্ষে সম্ভবপর নহে। অপরা বিদ্যাশ্রিত জনগণ ভাগবতের অধ্যাপক অভিমান করিয়া ভাগবতদাস হইবার পরিবর্তে ভাগবতগণের প্রভু-অভিমানে উদরম্ভরি হইয়া পড়ে। তাহারা ব্যবসায়কেই ‘ধর্ম’ বলিয়া নানাবিধ ভক্তিবিরোধী অনুষ্ঠানকেই নিত্যানন্দানুগত্য বলে; কিন্তু সর্বতোভাবে উহাই নিত্যানন্দ-নিন্দা।