বাহ্যদৃষ্টিতে চৈতন্যানুগ-গণের দারিদ্র্য-মূর্খাদি প্রতীতি—
ধন নাহি, জন নাহি, নাহিক পাণ্ডিত্য।
কে চিনিবে এ সকল চৈতন্যের ভৃত্য ॥
আধ্যক্ষিক-জ্ঞানে অর্থাৎ বাহ্য পরিচয়ে বৈষ্ণবের স্বরূপ চিহ্নিত করা অসম্ভব। অধিক ধন থাকিলেই যে তাঁহার অধিক বৈষ্ণবতা হইবে—এরূপ নহে। বহুলোক সংগ্রহ করিতে পারিলেই যে তিনি অধিক বৈষ্ণব হইবেন—এরূপ নহে। শাস্ত্রাদিতে অধিক পাণ্ডিত্য থাকিলেই যে তিনি বিষ্ণুভক্ত হইবেন—এরূপ নহে। শ্রীচৈতন্যের দাসগণের অধিক ধনের পরিচয় না থাকিতে পারে, অধিক লোকসংগ্রহের পরিচয় না থাকিতে পারে, অধিক তর্কবিতর্কাত্মক পাণ্ডিত্যের অধিকার না থাকিতে পারে। কিন্তু সেই সকল বিষয়ে তাঁহারা কেন উদাসীন, তাহা বুঝিবার অধিকার সাধারণের নাই। শ্রীচৈতন্য-সেবাকেই তাঁহারা ধন, জন, পাণ্ডিত্যাপেক্ষা বহুমানন করেন; সুতরাং তাঁহাদের গৌরব, মহিমা ও শ্রেষ্ঠত্রা লোক-নয়নের গোচরীভূত হইবার সম্ভাবনা নাই।