শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মাযুক্ত ভূজচতুষ্টয় ধারণ করিয়া মহাপ্রভু অনেক ভাগ্যবান্ ব্যক্তিকে স্বীয় নারায়ণ-স্বরূপ প্রদর্শন করেন এবং কাহাকেও কাহাকেও নিজের ষড়্ ভুজ-মূর্তি প্রদর্শন করেন। নৃসিংহের ভুজদ্বয়, রামের ভুজদ্বয় এবং কৃষ্ণের ভুজদ্বয় সম্মিলিত হইয়া ষড়্ ভুজ। নৃসিংহের দক্ষিণ হস্তে ভক্তবাৎসল্য ও বামকরে নখর দ্বারা ভক্তদ্বেষীর বিদারণ, রামচন্দ্রের ধনুর্বাণযুক্ত হস্তদ্বয়ে ভোগিসম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাশা-সংহারকার্য, এবং কৃষ্ণের ভুজদ্বয়ে মুরলীর দ্বারা প্রেমভাজন জনগণের আকর্ষণ,—এই লীলাত্রয় প্রদর্শনকল্পে শ্রীগৌরসুন্দর ষড়্ ভুজ-মূর্তি প্রদর্শন করিয়াছিলেন। কোন কোন সময়ে তাঁহার ষড়্ ভুজে কনকাভিলাষ, প্রতিষ্ঠাশা ও কামভোগ-তৎপরতার অবসানরূপ অন্য কথাও প্রকাশিত হয়। রামের ভুজদ্বয়ে ধনুর্বাণ, কৃষ্ণের ভুজদ্বয়ে মুরলী ও শ্রীচৈতন্যদেবের ভুজদ্বয়ে আমরা দণ্ড-কমণ্ডলু দর্শন করি। তাহতে কনক-লঙ্কাবিধ্বংসী রামভুজদ্বয়, রতিলোলুপ মদনবিধ্বংসী ব্রজেন্দ্রনন্দনের মুরলীবদ্ধ ভুজদ্বয়, আর জীবের কামিনী-আহরণ চেষ্টারূপ প্রতিষ্ঠাশা-নাশী ভুজয়দ্বারা পরিপালন জ্ঞাপন করে। নানাপ্রকার মতবাদ অদ্বয়জ্ঞানেতর পথের পথিকগণকে ভক্তিবিমুখ করিয়া জগতে যে কুতর্কজঞ্জাল উপস্থিত করিয়াছিল, একহস্তে দণ্ডধারণ দ্বারা সেই জঞ্জালাচ্ছন্ন লোকগণকে দণ্ডিত ও অন্যহস্তে প্রেমবারিভাজন কমণ্ডলু-ধারণ-দ্বারা আধ্যক্ষিক প্রতিষ্ঠাকাঙ,ক্ষী জনগণের কৈতব-মূল উৎপাটন করিয়াছেন।