আপনার বধূ দেখে পুত্রের হৃদয়ে।
সকৃৎ দেখিয়া আর দেখিতে না পায়ে ॥
শ্রীশচীদেবী দেখিলেন, পাঁচ বৎসরের দুইটী শিশুই—বস্ত্রবিহীন; একটীর বক্ষে কৌস্তুভ, অপরের হস্তে হল-মূষল। উভয় শিশুই—চতুর্ভুজ। একটী শিশুর বক্ষে পুত্রবধূ বিষ্ণুপ্রিয়া-দেবী অবস্থিতা । একবার মাত্র এইরূপ দর্শন করিয়াই আর দেখিতে পাইলেন না।
“আপনার বন্ধু দেখে পুত্রের হৃদয়ে’’ আর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের বক্ষঃস্থলে লক্ষ্মীদেবীকে দর্শন করিলেন। ‘শ্ৰীঃ প্রেক্ষ্য কৃষ্ণসৌন্দর্যং তত্র লুব্ধ ততস্তপঃ। কুর্বতীঃ প্ৰাহ তাং কৃষ্ণঃ কিন্তে তপসি কারণম্ ? বিজিহীর্যে ত্বয়া গোষ্ঠে গোপীরূপেতি সাঽব্রবীৎ। তদ্দুর্লভমিতি প্ৰোক্তা লক্ষ্মীস্তং পুনরব্রবীৎ॥ স্বর্ণরেখেব তে নাথ বস্তুমিচ্ছামি বক্ষসি। এবমস্ত্বিতি সা তস্য তদ্রূপা বক্ষসি স্থিতা।’’ (—পাদ্মে) অর্থাৎ লক্ষ্মীদেবী শ্রীকৃষ্ণের সৌন্দর্য অবলোকনপূর্বক তাহাতে লোলুপ হইয়া তপস্যায় প্রবৃত্ত হইলে শ্রীকৃষ্ণ তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার তপস্যার কারণ কি?” লক্ষ্মী কহিলেন,—“আমি গোপীরূপ ধারণ করিয়া বৃন্দাবনে তোমার সহিত
বিহার করিতে অভিলাষ করি।’’ শ্রীকৃষ্ণ বলিলেন,—“তাহা বড়ই দুর্লভ।’’ লক্ষ্মী পুনর্বার বলিলেন,—“নাথ! আমি স্বর্ণরেখার ন্যায় হইয়া তোমার বক্ষঃস্থলে অবস্থান করিতে ইচ্ছা করি।’’ তখন শ্রীকৃষ্ণ বলিলেন,—“আচ্ছা, তাহাই হইবে।’’ লক্ষ্মীও স্বর্ণরেখারূপে শ্রীকৃষ্ণের বক্ষঃস্থলে অবস্থান করিতে লাগিলেন।