আজি আমি এড়াইনু পরম সঙ্কটে।
সেহো যে কারণ তুমি আছিলা নিকটে ॥
যেহেতু- মুকুন্দ গদাধর পণ্ডিতকে পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির ভক্তি দর্শন করিবার সুযোগ দিয়াছিলেন এবং বিদ্যানিধিকে জড় বিলাস-মত্ত ব্যক্তির আদর্শে দর্শন করিবার অভিনয়ে গদাধর প্রভুর ভ্রান্তি-লীলা-প্রকাশে পুণ্ডরীকের ন্যায় পরমবৈষ্ণবে সাধারণ নরবুদ্ধি প্রকাশিত হওয়ায় যে অপরাধরূপ বিপদ মকুন্দের গানে নিবারিত হইল, তন্নিমিত্ত কৃতজ্ঞ হইয়াই গদাধরের এই উক্তি।
আধ্যক্ষিকগণ বৈষ্ণবের ক্রিয়ামুদ্রা বুঝিতে না পারিলে তাহাদের প্রতিমুহূর্তেই বিচার-দোষ উপস্থিত হইবে এবং বৈষ্ণবের নিকট অপরাধ পুঞ্জীভূত হইবে। কিন্তু সুকৃতি থাকিলে বৈষ্ণবাপরাধী হইযা বিপথগামী হইতে হয় না। ফলুবৈরাগ্যে যুক্তবৈরাগ্যের সুফল নাই, পরন্তু দ্রষ্টার প্রকৃত-দর্শনাভাবে অপরাধ সঞ্চিত হয় মাত্র। চৈতন্যাশ্রিত জনগণ যুক্তবৈরাগ্য ও ফল্গুবৈরাগ্যের মধ্যে ভেদ বুঝিতে পারেন বলিয়া তাঁহারা জগতের সাধারণ মুর্খ, লুব্ধ জনগণ অপেক্ষা সর্বতোভাবে শ্রেষ্ঠ। তাঁহারাই জগতে গুরুর কার্যকরিতে সমর্থ। চৈতন্যদেবের আনুগত্যহীন হইয়া প্রপঞ্চ-দর্শনে অনেকেই স্ব-স্ব-মূর্খতাকে বহুমানন করিয়া থাকেন।