বুঝিয়া আমার চিত্ত তুমি মহাশয়।
প্রকাশিলা পুণ্ডরীক ভক্তির উদয় ॥
বৈষ্ণবগণ চিরদিনই নির্বিষয়ী । যে-সকল ভাগ্যহীন সত্যদর্শনে বিমুখ, তাহারাই বাহিরের পরিচ্ছদ দেখিয়া বৈষ্ণব-গুরুতে শ্রদ্ধাহীন হইয়া পড়ে। বিষয়ী রূপ-রসাদি বিষয়-গ্রহণে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু জড়বিষয়বর্জিত ভগবদ্ভক্ত লোকচক্ষে তাদৃশ বিষয়ের গ্রাহক বলিয়া পরিচিত হইলেও তিনি বিষয় হইতে সুদূরে অবস্থিত। ভগবদ্ভক্তের কৃষ্ণ বিষয়; কৃষ্ণ সেবা ব্যতীত অন্য কোন প্রবৃত্তি নাই। সে কথা বিষয়িগণ বুঝিতে না পারিয়া ভক্তগণকে নিজ সমশ্রেণীতে গণনা করেন। আপাত-দর্শনে বৈষ্ণবের বিষয়ীর পরিচছদ দেখিয়া বৈষ্ণবকে বিষয়ি-জ্ঞান-অপরাধের কারণ। ছন্নাবতার গৌরসুন্দর ও তাঁহার পার্ষদগণ অযোগ্য দর্শকদিগের দ্বারা যেরূপভাবে পরিদৃষ্ট হন, তাহাতে প্রাকৃত-সাহজিক-ধর্ম উদ্ভূত হইয়াছে। প্রাকৃত সহজিয়াগণ অপরাধী ও ভগবদ্ভক্তি বর্জিত ।
পুণ্ডরীক বিদ্যানিধিকে মুকুন্দ-কথিত ‘বৈষ্ণব’-বুদ্ধি না করিয়া তাঁহার ব্যহ্যানুষ্ঠান ও বিলাস-দ্রব্য-পরিবেষ্টিত অবস্থা দর্শনে ‘বিষয়ী’ বলিয়া যে বোধ, তাহা অজ্ঞানোত্থ। ইহা জানিয়াই পুণ্ডরীকের নিকট পূতনার কথা গান করা মুকুন্দের প্রয়োজন হইয়াছিল।