কথো রাত্রে নিত্যানন্দ হুঙ্কার করিয়া ।
নিজদণ্ড কমণ্ডলু ফেলিলা ভাঙ্গিয়া ॥
যতি ও ব্রহ্মচারীর ব্যবহার্য কমণ্ডলু—জলভাজন গৃহস্থগণের বহু পাত্র থাকায় তাঁহাদের শুদ্ধাশুদ্ধি-বিচারে বিভিন্ন পাত্রসমূহ আছে। যতিগণের একমাত্র পাত্র —কমণ্ডলু । তদ্দ্বারাই সকল শ্রেণীর কার্য তাঁহাদের নির্বাহ করিতে হয়। অলাবু—‘যতি-পাত্র’ বলিয়া শাস্ত্রে বিহিত আছে। ব্রহ্মচারিগণেরও যতিসেবা বিহিত হওয়ায় গুরুর কমণ্ডলু-বহনরূপ কার্য আছে। গৃহস্থ অধ্যাপকের নিকট উপকুর্বাণ-ব্রহ্মচারী আশ্রম-বিশেষে বাস করেন। ব্রহ্মচারী পরিব্রাজক সন্ন্যাসীর যতি-পাত্র কমণ্ডলু বহন করিয়া থাকেন। শ্রীনিত্যানন্দস্বরূপ কোন মতে শ্রীলক্ষ্মীপতি তীর্থের সহিত ব্রহ্মচারিরূপে অবস্থিত হওয়ায় তাঁহার কমণ্ডলু ও ব্রহ্মচারীর দণ্ড (খদির-পলাশ-বংশের অন্যতম) ছিল, কোন মতে শ্রীমাধবেন্দ্রপুরীপাদের ব্রহ্মচারীরূপে প্রভু নিত্যানন্দ ভ্রমণ করিয়াছিলেন। বর্তমান কালে ‘তীর্থ ও আশ্রম’-নামক সন্ন্যাসীগণের ব্রহ্মচারীকে ‘স্বরূপ’-শব্দে আখ্যাত করা হয়। সরস্বতী, ভারতী ও পুরী সম্প্রদায়ের যতিগণের ব্রহ্মচারী ‘চৈতন্য’-শব্দে অভিহিত হন। শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর ব্রহ্মচারী-আখ্যা—‘স্বরূপ’ ছিল। তাহা হইতেই তীর্থের ব্রহ্মচারী বলিয়া কেহ কেহ তাঁহাকে ‘মাধবেন্দ্রপুরীর অনুগ’ বলিবার পরিবর্তে ‘লক্ষ্মীপতি-তীর্থের অনুগ’ বলিয়া বিচার করেন। দণ্ড—একদণ্ড ও ত্রিদণ্ড ভেদে দ্বিবিধ । (আঃ ১/৫৭ এবং ২/ ১৬২ গৌড়ীয়-ভাষ্য দ্রষ্টব্য) ।
শ্রীনিত্যানন্দ-প্রভু স্বীয় দণ্ড ও কমণ্ডলু প্রভৃতি ব্যাসপূজার পূর্বেই উচছৃঙ্খলতা প্রকাশ পূর্বক ভাঙ্গিয়া ফেলিলেন। প্রেম বিকারে বৈধী ভক্তির উদাপান-সমূহ ও বাহ্যনিষ্ঠা ত্যক্ত হয়। তাই বলিয়া বিশৃঙ্খলতা-সাধনকল্পে ‘এ চড়ে পাকা’ হইলে রসিক নামে পরিচয় পাইতে বাধা হয়।