ব্রহ্মা-মহেশ্বরাদি-বন্দ্য কমলার নিত্য-স্বভাব শ্রীভগবৎপাদপদ্ম-সেবা:—
ব্রহ্মা-মহেশ্বর-বন্দ্য যদ্যপি কমলা ।
তবু তাঁর স্বভাব চরণসেবা-খেলা ॥
স্বয়ংপ্রকাশ বলদেব প্রভু সঙ্কর্যণও অন্যান্য বিষ্ণুমূর্তি নিত্য প্রকট করাইয়া সকলের নিকট পূজা গ্রহণ করেন তাহা হইলেও তাঁহার সেবাপ্রবৃত্তি স্বাভাবিক ।এই কথা সমর্থনের জন্য লক্ষ্মীদেবীর উদাহরণে বলিতেছেন,—ব্রহ্মা-মহেশ্বরের পূজ্য লক্ষ্মীরও স্বাভাবিক চেষ্টায় কৃষ্ণসেবাই লক্ষিত হয় ।চতুর্মুখ ও মহাকালের বন্দনীয়া এবং সকলের পূজ্যা হইয়াও লক্ষ্মীদেবী ভগবৎসেবা করিয়া থাকেন ।“শ্রীরূপিণী ক্বণয়তী চরণারবিন্দং লীলাম্বুজেন হরিসদ্মনি মুক্তদোষা ।সংলক্ষ্যতে স্ফটিককুড্য উপেতহেম্নি সম্মার্জতীব যদনুগ্রঽণেঽন্যযত্নঃ॥’’ —(ভাঃ ৩/১৫/২১) অর্থাৎ যে লক্ষ্মীদেবীর অনুগ্রহ-লাভাৰ্থব্রহ্মাদি দেবগণও যত্ন করিয়া থাকেন, সেই মনোহরমূর্তিধারিণী লক্ষ্মীদেবীকে চাপল্য পরিত্যাগ-পূর্বক (অথবা প্রসারিত বাহুলতা দ্বারা) মধ্যে মধ্যে শ্রীহরির সুবৰ্ণসংযুক্ত স্ফটিকময় ভবনে নুপুরের মন্দমধুর শব্দ করিতে করিতে হস্তধৃত লীলাকমল দ্বারা যেন ঐ গৃহের মার্জন-সেবায় নিযুক্ত বলিয়া লক্ষিত হয় ।“ব্রহ্মদয়ো বহু তিথং যদপাঙ্গমোক্ষকামাস্তপঃ সমচরন্ ভগবৎপ্রপন্নাঃ ।সা শ্ৰীঃ স্ববাসমরবিন্দবনং বিহায় যৎপাদসৌভগমলং ভজতেঽনুরক্তা ॥’’ (—১/১৬/৩৩ ) অর্থাৎ ব্রহ্মদি দেবগণ ভগবানে প্রপন্ন হইয়াও, যে কমলার কিঞ্চিৎকরুণাকটাক্ষলাভের আশায় বহুকাল তপস্যা করিয়াছিলেন, সেই কমলা আপনার নিবাসভূত কমলবন পরিত্যাগ করিয়া সানুরাগে (যে) শ্রীকৃষ্ণের আমল-চরণ-কমল-সৌন্দর্য অবিরত সেবা করেন।