Normal view
Book Lang.: বাংলা
English
संस्कृता वाक्
Translation

কথাসার

Language: বাংলা
Language: English Translation
  • চতুর্থ অধ্যায়ের কথাসার

    এই অধ্যায়ে ভক্তবৃন্দের নিকট নিত্যানন্দ-মহিমা-প্ৰকাশাৰ্থ শ্রীগৌরসুন্দরের কৌশল, শ্রীবাসকে ভাগবতের শ্লোক পাঠ করিতে মহাপ্রভুর আদেশ, শ্রীমদ্ভাগবতের শ্লোক-শ্রবণে নিত্যানন্দের মূর্ছাএবং বিবিধ সাত্ত্বিক বিকার, মহাপ্রভু-কর্তৃক নিত্যানন্দকে ক্রোড়ে ধারণ; মহাপ্রভু ও নিত্যানন্দের ইঙ্গিতে আলাপ, নিতাই কর্তৃক মহাপ্রভুর অবতার-মর্ম-প্রকাশ এবং গ্রন্থকার কর্তৃক নিত্যানন্দের মহিমা প্রভৃতি বিষয় বর্ণিত হইয়াছে।

    নন্দনাচার্য ভবনে নিত্যানন্দের আগমন ও অবস্থান জানিয়া মহাপ্রভু স্বগণসহ তথায় গমনপূর্বক নিত্যানন্দকে দণ্ডবৎ প্রণামানন্তর তাঁহার সম্মুখে দণ্ডায়মান থাকিলে বলদেবাভিন্ন শ্রীনিত্যানন্দপ্রভু সর্বেন্দ্রিয় দ্বারা নিজ নিত্যসেব্য। শ্রীগৌরসুন্দরের রূপাদি আস্বাদন-লীলা করিতে থাকিলেন। অন্তর্যামী শ্রীগৌরসুন্দর নিত্যানন্দ প্রভুর মহিমা-প্রকাশার্থ শ্রীবাসকে শ্রীমদ্ভাগবতোক্ত একটী শ্লোক পাঠ করিতে আদেশ করিলেন। প্রভুর ইঙ্গিত বুঝিয়া শ্রীবাস শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন-লীলাসূচক একটী শ্লোক পাঠ করিবা মাত্র প্রেমময়-বিগ্রহ শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু মুর্ছিত হইয়া পড়িলেন। মহাপ্রভুর আদেশক্রমে শ্রীবাস পণ্ডিত পুনঃ পুনঃ শ্লোক পাঠ করিতে থাকিলে কিয়ৎকাল পরে নিত্যানন্দ প্রভু সংজ্ঞা প্রাপ্ত হইয়া পুনর্বার শ্লোক শ্রবণপূর্বক ভূমিতে বিলুষ্ঠিত হইলেন। সকলে ভীত হইয়া কৃষ্ণসকাশে তদ্‌রক্ষার্থ প্রার্থনা করিতে থাকিলেন। ভাবাবেশে নিত্যানন্দের বিবিধ আঙ্গিক বিকার প্রকাশ পাইলে সকলে সেই অদ্ভুত প্রেমানন্দ দর্শনে পুলকিত হইয়া নিত্যানন্দকে ধরিয়া রাখিতে চেষ্টা করিলেন। কিন্তু তাহাতে অসমর্থ হইলে মহাপ্রভু স্বয়ং নিত্যানন্দকে নিজ ক্রোড়ে স্থাপন করিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে নিত্যানন্দ বাহ্য প্রাপ্ত হইলে বৈষ্ণবগণ আনন্দধ্বনি করিয়া উঠিলেন। নিত্যানন্দ-প্রভাব-জ্ঞাতা গদাধর বিপরীত ভাব দেখিয়া অর্থাৎ যে নিত্যানন্দ অনন্ত-রূপে দশদেহে গৌরসুন্দরের সেবা করেন, তিনিই আজ মহাপ্রভুর ক্রোড়ে অবস্থান করিতেছেন দেখিয়া মনে মনে হাস্য করিতে লাগিলেন। গৌরসুন্দর নিত্যানন্দকে দর্শন করিয়া বিবিধ স্তুতিবাক্যে নিত্যানন্দের গূঢ় চরিত্রের বিষয় প্রকাশ করিলেন। উভয়ের পরস্পর ইঙ্গিতে অনেক আলাপ হইবার পর, কোন্‌স্থান হইতে নিত্যানন্দের শ্রীনবদ্বীপে শুভ-বিজয় হইল, তদ্বিষয়ে মহাপ্রভুর জিজ্ঞাসাক্রমে নিত্যানন্দ প্রভু নিজ তীর্থভ্রমণ রহস্য-জ্ঞাপন-মুখে মহাপ্রভুর অবতার-মর্ম প্রকাশ করিলেন অর্থাৎ মহাপ্রভুই যে অভিন্ন-ব্রজেন্দ্রনন্দন, নিজ ঔদার্যবিগ্রহ নবদ্বীপে অবতীর্ণ করিয়াছেন, তাহা নিজমুখে ব্যক্ত করিলেন। মহাপ্রভু ও নিত্যানন্দের পরস্পর আলাপ-শ্রবণে ভক্তগণ নানারূপ কল্পনা করিতে লাগিলেন। তাঁহারা উভয়ের আলাপের মর্ম অবগত না হইলেও বুঝিলেন যে, উভয়ে দীর্ঘকালের পরিচিত এবং উভয়েই সেব্য বিগ্রহ। নিত্যানন্দ প্রভু বিষয়জাতীয় বিগ্রহ হইলেও নিত্যকাল বহুপ্রকারে অভিন্ন-ব্রজেন্দ্রনন্দন শ্রীগৌরসুন্দরের সেবা করিয়া থাকেন। নিত্যানন্দ-কৃপা ব্যতীত গৌরসুন্দরের সেবায় অধিকার লাভ হয় না। নিত্যানন্দ প্রভু গৌরসুন্দরের অভিন্নতনু। যাঁহারা সংসার-সমুদ্র উত্তীর্ণ হইয়া ভক্তিসাগরে নিমজ্জিত হইবার বাঞ্ছা করেন, শ্রীনিত্যানন্দের চরণসেবাই তাহাদের অভীষ্ট লাভের একমাত্র উপায়।

    জয় জয় জগৎজীবন গৌরচন্দ্র।
    অনুক্ষণ হউ স্মৃতি তব পদদ্বন্দ্ব
    ধ্রু

Page execution time: 0.0327229499817 sec