নিজানন্দে ক্ষণে ক্ষণে করয়ে হুঙ্কার।
মহামত্ত যেন বলরাম-অবতার ॥
শ্রীনিত্যানন্দপ্রভু মধ্যে মধ্যে আনন্দপ্রকাশক হুঙ্কার ধ্বনিতে নিজ পরিচয় প্রদান করিবার জন্য জগতে লীলা করেন। তিনি সর্বক্ষণ ভগবান্ চৈতন্যদেবের প্রেম-প্রদানলীলার সহায়তা করিবার জন্য সর্বতোভাবে উন্মত্ত। ব্রজে শ্রীবলদেবপ্রভু যেরূপ শ্রীকৃষ্ণের সেবা কার্যে সর্বতোভাবে নিযুক্ত, গৌড়দেশেও চৈতন্য-বিহার-ভূমিকায় নিত্যানন্দের প্রেমোন্মত্ত ভাব ও আনন্দোচ্ছৃস সেইরূপ সকলজীবের হৃদয়ের মলিনতা নীরাজিত করিবার জন্য কর্ণকুহরের সাহায্যে চিত্ত অধিকার করিয়া থাকেন। ‘নিজানন্দ’ বলিলে কাহারও যেন এরূপ ভ্রম না হয় যে, আমাদিগের প্রভু শ্রীনিত্যানন্দ আমাদেরই ন্যায় লঘু-জাতীয় মায়াবদ্ধ জীববিশেষ। এই ‘নিজ’-শব্দের অর্থ—ভগবদ্বোধক। অচিদ্বিলাসপর বিচারে বদ্ধ -জীবের আনন্দ সর্বদা বাধাপ্রাপ্ত এবং আনন্দাধার ও আনন্দের মধ্যে ব্যবধান বর্তমান। নিত্যানন্দপ্রভু স্বয়ং মহাবিষ্ণুতত্ত্বের একমাত্র স্বত্বাধিকারী বলিয়া তাঁহাতে প্রাপঞ্চিক দেহ-দেহি-বিচার আনয়ন করিলে ‘নিজানন্দ’-শব্দের যথার্থ উপলব্ধি করাইতে ব্যাঘাত ঘটাইবে।