এত বলি’ মহাপ্রভু স্তম্ভ হাতে লৈয়া।
পড়ুয়া মারিতে যায় ভাবাবিষ্ট হৈয়া।
শ্রীগৌর-সুন্দর আপনাকে বৃন্দাবনবাসিনী গোপতনয়া জ্ঞানে বার্ষভানবীকে উদ্দেশ করিয়া সম্বোধন করিতেছেন শুনিয়া কোন পাঠাৰ্থী ব্রাহ্মণবটু গৌর-ভগবানের হৃদ্গত মর্ম উপলব্ধি করিতে না পারিয়া তাঁহাকে বলিল কৃষ্ণ-নামই সংসার হইতে উদ্ধার লাভের তারক-মন্ত্র, তাহা পরিত্যাগ করিয়া তুমি কেন ‘গোপী নাম’ উচ্চারণ পূর্বক বিপথগামী হইতেছ? বালক পড়ুয়া জানিত না যে, কৃষ্ণের আশ্রয়বিগ্রহ গোপীর আনুগত্য-রহিত হইয়া কৃষ্ণ-পাদপদ্ম পাওয়া যায় না; বিশেষতঃ ঐ নির্বোধ পড়ুয়া শ্রীমদ্ভাগবতের “আহুশ্চ তে নলিননাভ’’ শ্লোকের আলোচনা না করায় প্রায়শ্চিত্তার্হ স্মার্ত ব্যবস্থাপকের ন্যায় যে বিচার-মুখে গৌরসুন্দরকে কৃষ্ণ বলাইবার যত্ন করিয়াছিল, তাহাতে গৌরসুন্দরের রসবিপর্যয় ঘটায় শ্রীমাধবেন্দ্রপুরী যেরূপ রামচন্দ্রপুরী নামক বিপথগামী শিষ্যকে বিতাড়িত করিয়াছিলেন, তদ্রূপ মহাপ্রভু উক্ত পড়ুয়ার-প্রতি ব্যবহার দেখাইতে প্রবৃত্ত হইলেন। যে কৃষ্ণ ‘দস্যু’, অভিলাষিণী সূর্পণখার কর্ণ-নাসিকা ছেদনকারী, বালীর হন্তা ও সর্বস্বগ্রহণ-পূর্বক বলিকে পাতাল প্রেরক—সেই কৃষ্ণের আশ্রয় গ্রহণ করিলে আমার কি লাভ ঘটিবে?—এরূপ প্রণয়-কলহসূচক বাক্যাদি প্রয়োগ করিতে করিতে মহাপ্রভু পড়ুয়াকে তাড়ন করিয়াছিলেন।