মাথা মুড়াইলে প্রভু, কিবা কর্ম হয়।
তোমার সে মত, এ বেদের মত নয়।
শ্রীগদাধর বলিলেন—“গৃহস্থ হইলে কি বিষ্ণুভক্তি হয় না? ইহাই কি বেদের উদ্দেশ্য ? সুতরাং হরিভক্তির আদর্শ দেখাইতে গিয়া কেবলাদ্বৈতীর ন্যায়ে শিখা-সূত্রত্যাগ করিলেই কি অধিকতর শ্রেষ্ঠত্ব হয় ? গৃহস্থধর্মে থাকিয়া হরিভজন করিলে জননী সন্তুষ্ট হন। বন্ধুবান্ধব সকলেই আনন্দিত হন।’’ প্রতিকুল-সংসার অবশ্য ত্যাজ্য —ইহা শিক্ষা দিবার জন্যই শ্রীগৌরসুন্দর নবদ্বীপের ঈর্ষাপরায়ণ বন্ধুবান্ধবের সঙ্গ বর্জন করিলেন। আর একটি উদ্দেশ্য এই যে অবৈধ গৃহস্থের ধর্ম প্রতিষ্ঠিত থাকিয়া যে প্রাকৃতসহজিয়া ধর্ম আজকাল ভারতবর্ষকে আচ্ছন্ন করিয়াছে, উহা হইতে উন্মুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেওয়াও শ্রীগৌরসুন্দরের উদ্দেশ্য ছিল। সর্বক্ষণ সকল আশ্রমে থাকিয়া হরিভজন করাই প্রত্যেক মানবের কর্তব্য। অনুকূল সংসার মনে করিয়া ভক্তির প্রতিকূল স্মার্তধর্মের আনুগত্যে শ্রাদ্ধতৰ্পণাদি অদৈব বা সমাজের অনুকূলে ভগবদ্বিরোধী জনগণের সম্মানাদি দিতে গেলে ভগবদ্ভক্তের মর্যাদা অনভিজ্ঞের চক্ষে ক্ষুন্ন হয় —এই সকল দেখাইবার উদ্দেশ্যেই শ্ৰীগৌরসুন্দর বিধিমতে সন্ন্যাস গ্রহণের অভিনয় করিয়াছিলেন।