হের সবে পড়িলাঙ কালি তার সনে।
আজি তেঁহো ‘গোসাঞি’ বা হইল কেমনে!!।”
ত্রস্ত পড়ুয়া তাহার ন্যায় অল্পবুদ্ধি পণ্ডিতাভিমানী জনগণের নিকট আসিয়া শ্রীগৌরসুন্দরের আচরণ বলিলেন। তাহাতে তাঁহার সহাধ্যায়িগণের কেহ কেহ বলিলেন,—“বিশ্বম্ভর যখন আমাদের সহিত একত্র পাঠ করিয়াছিলেন, তখন তিনি ‘মুক্ত পুরুষ ‘মহাভাগবত’ হইবেন কিরূপে? তিনি জগন্নাথের পুত্র-মাত্র ; আমরাও পণ্ডিত জগন্নাথ মিশ্রের ন্যায় ব্যক্তিগণের সন্তান!
তিনি ত’ কিছু রাজা নহেন—যে দণ্ডবিধানকর্তা! তিনি দণ্ড দিতে আসিলে আমরাও দণ্ড দিব। আমারাও তাঁহার ন্যায় ব্রাহ্মণ সন্তান ব্রাহ্মণকে মারিতে আসিলে আমরাই বা কেন সহ্য করিব? যদি তাঁহাকে কেহ ‘বৈষ্ণব’ বলিয়া ব্রাহ্মণাপেক্ষা উচ্চাসন দেন, তবে বৈষ্ণবোচিত ‘কৃষ্ণনামই’ তাঁহার মুখে শোনা যাইত বা যাইবে। তাঁহার এই অদ্ভুত ‘গোপী’ নামোচ্চারণ শ্রবণে কেহ তাঁহাকে ‘বৈষ্ণব’ বলিবে না।’’ বৈষ্ণবের ধর্ম —ব্রাহ্মাণানুগত্য(!); সুতরাং ব্রাহ্মণলঙ্ঘনার্থ যখন তাঁহার ক্রোধোদ্রেক হয়, তখন তাঁহাকে ব্রাহ্মণবিদ্বেষী বলিয়াই জানিবে। পাপচিত্ত জনগণ পাপভারপূর্ণ হইয়া যেরূপ চিত্তবৃত্তিবিশিষ্ট হয়, তাহা যুগযুগান্তর ধরিয়াই চলিয়া আসিতেছে। অদ্যাপি সেরূপ নিষ্ঠুরতার পরিচয় দেখিতে পাওয়া যায়।