“মৎস্য খাও, মাংস খাও, কেমত সন্ন্যাসী।
বস্ত্র এড়িলাম আমি, এই দিগ্বাসী॥
শ্রীঅদ্বৈত বাদ-প্রতিবাদ ছলে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন,-“মৎস্য-মাংসভোজী দারি সন্ন্যাসী যেরূপ গৃহস্থের বসন ত্যাগ করিয়া দিগ্সন হইয়াছেন বলিয়া অভিমান করেন, তোমারও সেই জাতীয় ব্যবহার। বৈষ্ণববিদ্বেষী তান্ত্রিক বিষয়াসক্ত শাক্তেয় মতবাদি-সন্ন্যাসিগণ যেরূপ পঞ্চ’ম-কারের আবাহন করিয়া আপনাদের সন্ন্যাস-প্রসিদ্ধিসংরক্ষণ করিবার যত্ন করে, তুমিও সেই জাতীয়। যথেচ্ছাচারিতা কখনও বেদানুগত্য-প্রভাবে সন্ন্যাসীর ধর্ম হইতে পারে না।’’
এই সকল উক্তি পাঠ করিয়া নির্বোধ পাঠকগণ শ্রীবলদেব-নিত্যানন্দ-প্রভুকে যেন আচারভ্রষ্ট সন্ন্যাসচ্যুত জ্ঞান না করেন। যিনি অদ্বৈতের এইপ্রকার উক্তির মর্ম বুঝিতে না পারিয়া সরল ভাবে নির্বুদ্ধিতা প্রকাশ করিবেন, তিনি নিত্যানন্দ-প্রভুর স্বরূপ বুঝিতে অনুপযুক্ত জানিতে হইবে। শ্রীঅদ্বৈত-প্রভুর এই সকল বিদ্রূপোক্তি বা ব্যাজ নিন্দা মৎস্য-মাংস-ভোজিগণের দুষ্প্রবৃত্তি বর্ধনের একটি কৌশল মাত্র। যাহাদের অদৃষ্ট অতীব মন্দ, তাহারা এই সকল বাক্যের উদ্দেশ্য বুঝিতে না পারিয়া স্বীয় চাতুর্যের অভাবে জাগতিক পাল আশ্রয় করিয়া নরক পথের পথিক হয়। * ‘ভোগা-দেওয়া’ কথায় যাহারা ভুলিয়া যায়, তাহারা কখনও চতুর কৃষ্ণভক্ত হইতে পারে না।