প্রভু-কর্তৃক আত্মার নিত্যধর্মে শ্রীবার্ষভানবীর আনুগত্যে গোপী-অভিমানের সর্বোৎকর্ষ স্থাপন—
‘গোপী গোপী গোপী’ মাত্র কোন দিন জপে’।
শুনিলে কৃষ্ণের নাম জ্বলে মহা-কোপে॥
জীবের আত্মার নিত্যধর্মে শ্রীবার্ষভানবীর আনুগত্যে মধুর-রসে গোপী-অভিমানই সর্বোত্তম, এবং মধুর রসের আশ্রয় জীবাত্মস্বরূপ ‘গোপী’ বলিয়া ব্রজেন্দ্রনন্দন স্বয়ং গোপী-অভিমানে স্থিতি লাভ করিবার জন্য বহুবার ‘গোপী’ শব্দ জপ করিতেন। জীব যে আশ্রয়জাতীয় বিভিন্নাংশ ও বিষয়জাতীয় স্বয়ং-রূপ কৃষ্ণ নহেন,—একথা জানাইবার জন্য পঞ্চোপাসক মায়াবাদী বদ্বজীবের কৃষ্ণ হইতে অভিন্নাভিমান যে নিতান্ত অকিঞ্চিৎকর, তাহা জানাইতে গিয়া একপক্ষ যেমন কৃষ্ণনামে বিতৃষ্ণা প্রদর্শন করিবার অভিনয় দেখাইয়াছেন, অপর পক্ষে সেরূপ জীব মাত্রেরই সর্বক্ষণ কৃষ্ণের অনুসন্ধান এবং অনুসন্ধানের সহিত কৃষ্ণসেবা করাই যে পরম ধর্ম, তাহা জানাইয়াছেন; এই জন্যই শ্রীমহাপ্রভু ব্যতিরেক-ভাবে কৃষ্ণনামে বিতৃষ্ণা প্রদর্শন করিয়াছিলেন আর স্বরূপের উপলব্ধিতে কৃষ্ণনাম শ্রবণের তৃষাধিক্যে সমগ্রজগতের নিকট হইতে বিপরীত আচরণ মুখে তাঁহার বিরক্তি উৎপাদন করাইবার চেষ্টার ছলনায় অনুক্ষণ কৃষ্ণনাম-শ্রবণ স্পৃহা বর্ধন করিয়াছিলেন।