চৈতন্য-লীলার নিত্যত্ব—
অদ্যাপিহ চৈতন্য এ সব লীলা করে।
যাঁ’র ভাগ্যে থাকে, সে দেখয়ে নিরন্তরে॥
মধ্যবর্তি-দ্রব্যের দ্বারা দৃশ্যবস্তুর সম্পূর্ণ দর্শন ঘটে না। পূর্ণচেতনের যে যে অংশ জীবের ভোগ-প্রবৃত্তির দ্বারা আচ্ছন্ন হয়, তত্তদংশের দর্শনাভাব-হেতু শ্রীচৈতন্যদেবের সমগ্র নিত্যলীলা লোকচক্ষে আবৃত হয় মাত্র। যাঁহারা ফলভোগের আশায় বা ফল ত্যাগ-বাদের আলেয়ার পশ্চাদ্ ধাবিত হন না, তাদৃশ কর্মজ্ঞানাবরণ হইতে উন্মুক্ত পুরুষই শ্রীচৈতন্যলীলা সর্বদা দেখিতে পান। মানবের ভোগময়ী বা ত্যাগময়ী বুদ্ধি জড়তা উৎপাদন করে। সেই জাড্যের হস্ত হইতে মুক্ত হইলেই বদ্ধজীবের ভোগ ও ত্যাগ ভূমিকা অতিক্রম করিবার শক্তিলাভ ঘটে। নতুবা কালক্ষোভ্য ও পরিচ্ছিন্ন-বিচার অনুপাদেয় ইতর বস্তুর সহিত সমত্ব-বিচারে শ্রীচৈতন্য-লীলাকেও কর্মজ্ঞানাবৃত মানব-বিলাসের সহিত সমস্তরে পরিগণিত করিবার অসৎপিপাসা উদিত হয়।