শ্রীনবদ্বীপের শ্বেতদ্বীপের ধারণা জৈবজ্ঞানে প্রকাশের কাল—
বৈকুণ্ঠ-ঈশ্বর, প্রভু বিশ্বম্ভর,
সব নবদ্বীপে নাচে।
শ্বেতদ্বীপ-নাম, নবদ্বীপ-গ্রাম,
বেদে প্রকাশিব পাছে॥
সব নবদ্বীপে —নবদ্বীপের সকল-স্থানে অর্থাৎ অন্তর্দ্বীপ, সীমন্তদ্বীপ, গোদ্রুমদ্বীপ, মধ্যদ্বীপ, কোলদ্বীপ, ঋতুদ্বীপ, জহ্নুদ্বীপ, মোদদ্রুমদ্বীপ ও রুদ্রদ্বীপে।
শ্রীগৌরসুন্দর কেবল বিশ্বেশ্বর নহেন। তিনি বৈকুণ্ঠেরও ঈশ্বর অর্থাৎ মায়িক বিশ্ব ও মায়াতীত বৈকুণ্ঠ, উভয়েরই প্রভু॥
শ্বেতদ্বীপ—শ্রীগৌরবিচরণ-লীলা-ক্ষেত্রই যে ‘নবদ্বীপ’ বা ‘শ্বেতদ্বীপ’ এই প্রতীতি আধ্যক্ষিক মানবজ্ঞানে নিরস্ত হইয়া বাস্তবজ্ঞানে উদিত হয়। আধ্যক্ষিকগণ ভোগময়ী ধারণার বশে ধামের স্বরূপ উপলব্ধি করিতে পারে না। কিন্তু যে-কালে তাঁহাদের ধামের স্বরূপ বোধ হয় সে-কালে তাঁহারা জানিতে পারেন যে পশুপক্ষিমানবাদির ভোগ্যভূমি ‘শ্রীধাম’ নহেন ।
‘বেদ’ শব্দের অর্থ চারি। শ্রীনবদ্বীপ যে কেবল জড় ভূমিকা নহেন, তাহা পাঞ্চরাত্রিক চতুৰ্ব্যুহ-বিচারে প্রতিষ্ঠিত। একপাদবিভূতিতে যে দৃশ্য জগৎ, তাহা ত্রিপাদবিভূতিবর্জিত হওয়ায় চতুষ্পাদবিভূতির সহিত সমধারণা-বিশিষ্ট নহে। পঞ্চতত্তবিচারে যে সকল ধর্ম, উহারই চারিপ্রকার প্রকাশ ব্যূহতত্ত্বে অবস্থিত। আবার, পুরুষাবতারত্রয় তুরীয় বস্তু হইতে বিভিন্ন সাগরে পরিদৃষ্ট হইলে চতুর্বিধ প্রকাশের জ্ঞানলাভ হয়। এই পুরুষাবতারতত্ত্বের অভিজ্ঞানেই বৈকুণ্ঠ গোলোক-শ্বেতদ্বীপের ধারণা লাভ ঘটে। ভগবৎপ্রাকট্যের ৪০০ বৎসর বা ৪০৪ বৎসর অথবা ৪৪৪ বৎসর পরে শ্রীনবদ্বীপ ধামের শ্বেতদ্বীপত্ব ধারণা জৈবজ্ঞানে প্রকাশিত হইয়াছে।