প্রভুর শ্রীমুখে ভাগবত-তত্ত্ব শ্রবণে বৈষ্ণবগণের আনন্দ—
ভাগবত-তত্ত্ব প্রভু কহে ক্রোধাবেশে।
শুনিয়া বৈষ্ণবগণ মহানন্দে ভাসে॥
দেবানন্দ পণ্ডিত মুমুক্ষু ছিলেন। তিনি মায়াবদ্ধ-বিচারে যেরূপ বুঝিয়াছিলেন, তাহাতে তপস্যা, জগতে ঔদাসীন্য প্রভৃতিকে বহুমান করিতেন। পরমার্থ ‘বিষয়ে’র কোনরূপ ধারণা তাঁহার ছিল না। লৌকিক প্রয়োজন—জগৎ হইতে মুক্ত হওয়া এবং সেই জ্ঞানে বিভোর থাকায় ভাগবতের বিচারে গ্রহণ করিতে তিনি অক্ষম হইয়াছিলেন। কর্মজ্ঞানাবৃত অবস্থায় কোনও ব্যক্তির স্বরূপের পরিচয় ঘটে না সুতরাং ভগবদুপাসনার নিত্যত্ব উপলব্ধির বিষয় হয় না। ভগবৎসেবা-বঞ্চিত জনগণ যে-কালে আত্মস্বরূপ বিস্মৃত হইয়া ভগবৎ-সেবায় উদাসীন হন এবং তাহাই পুরুষার্থ বলিয়া জ্ঞান করেন, সেইকালে পরম দয়াময় গৌরসুন্দর অভক্তের তাদৃশ কার্যে বিরক্তি প্রকাশ করেন এবং তাহার মঙ্গলের জন্য সেরূপ কার্য নিতান্ত গর্হণীয় ও অপ্রয়োজনীয় জানাইতে গিয়া কর্মফল-ভোগ বা ত্যাগ নিতান্ত অন্যায়—ইহাই জানান। এই ক্রোধ-দর্শনে বৈষ্ণবগণ পরমানন্দ লাভ করেন।