চারি বেদ—‘দধি’, ভাগবত—‘নবনীত’।
মথিলেন শুকে, খাইলেন পরীক্ষিত॥
বেদশাস্ত্রকে দধির সহিত উপমা দেওয়া হইয়াছে। শুকদেব সেই দধির মন্থনকারী; তাহা হইতে বেদ-তাৎপর্য নবনীত শ্রীমদ্ভাগবতরূপে উদিত হইলেন। শ্রীপরীক্ষিৎ বিষয়নিবৃত্ত হইয়া সকল বেদ-তাৎপর্য শ্ৰীশুকদেবের উপদেশ হইতে লাভ করিলেন। মিরাট জেলার প্রান্তভাগে হস্তিনাপুর অবস্থিত। বর্তমান মজঃফরনগর জেলার প্রান্তভাগে ভোপা থানার অধীন ভুখারহেড়ি জনপদের নিকটবর্তী শুকরতল গ্রামেই গঙ্গাতটে শ্রীপরীক্ষিৎ মহারাজ প্রায়োপবেশন করিয়া শ্ৰীশুকদেবের নিকট হইতে সমগ্র বেদ তাৎপর্য সপ্তাহকালমধ্যে সংগ্রহ করিয়াছিলেন। দধির মন্থনে যে রূপ সারাংশ ননী বাহির হয়, সেইপ্রকার বেদের কর্মকান্ড ও জ্ঞানকাণ্ডরূপ অসার অংশের অকিঞ্চিতকরতা প্রদর্শন করিয়া প্রেমভক্তির সারত্ব নির্দিষ্ট হইয়াছিল। পরীক্ষিৎ অন্যান্য সকল কথা। পরিবর্জন করিয়া সেই সার গ্রহণ করিয়াছিলেন বলিয়া ভাগবতগণ সকলেই “সারগ্রাহী”। বিদ্ধভাগবতগণ অসৎ সংসর্গে ফলভোগবাদ ও ফলত্যাগবাদের বিচার-সংশ্লিষ্ট হইয়া ভারবাহি-রূপে আত্মগ্লানি উপস্থিত করিয়াছেন। অসার-মিশ্রিত কিঞ্চিৎ সার অপেক্ষা অসার-রহিত বিশুদ্ধ সারই বা নির্যাস গ্রহণীয়, উহাই আত্মবিদ্গণের ভোজ্য ও পেয়। অসারগ্রাহিগণ ফলভোগবাদে স্থূলভাবে ভারবাহী এবং ফলত্যাগবাদে বাহ্যে ‘ভারহীন’ হইবার ভাণ করিলেও সূক্ষ্মভাবে অধিকতর গুরুভারবাহী। উভয়েই সারগ্রহণে পরাঙ্মুখ।