প্রভু-কর্তৃক ভাগবতের স্বরূপ-বর্ণন—
এ বেটার ভাগবতে কোন্ অধিকার?
গ্রন্থরূপে ভাগবত কৃষ্ণ-অবতার॥
‘বেটা’ শব্দে তুচ্ছতাজ্ঞাপক অনভিজ্ঞ জনকেই বুঝায়। শিশু যেরূপ অজ্ঞানাশ্রিত হইয়া পিতার নিকট মূর্খতা প্রকাশ করে এবং পিতা বা উপদেশক যেপ্রকার অনভিজ্ঞ জনগণকে ‘নির্বোধ’ প্রভৃতি শব্দে অভিহিত করেন, বেটাশব্দ সেইরূপ তাহারই সুষ্ঠুভাব প্রকাশকারী। ভাগবতের তাৎপর্যে প্রবিষ্ট না হইয়া কেবল শব্দোদ্দিষ্ট ব্যাপার-সমূহকে জড়বাসনায় আবদ্ধ যাঁহারা বিচার করেন, তাঁহাদের ভগবৎসম্বন্ধিনী কথায় কোনপ্রকার প্রবেশ-লাভ ঘটে না। শ্রীমদ্ভাগবতগ্রন্থে কৃষ্ণকথার বর্ণন আছে। সেই কৃষ্ণকথাকীর্তন কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হইলে সাক্ষাৎ কৃষ্ণের স্ফূর্তি হয়, তখন জড়কথারূপ আবর্জনা-কর্ণমল-মধুকৈটভ নামক অসুরদ্বয় বিনষ্ট হয়। ইহাই ‘কর্ণবেধ’-সংস্কার। চিন্ময় কর্ণ জড়াবৃত আছে বিচার করিলে ভোগপর বাক্যসমূহ আমাদিগের হৃদয়কে চঞ্চল করায়। তখন কৃষ্ণেতর ব্যাপারই আমাদের লক্ষ্যের বিষয় হয়। বৈকুণ্ঠ-নাম-গ্রহণ, বৈকুণ্ঠ-রূপ-শ্রবণ, বৈকুণ্ঠ গুণ-শ্রবণ, বৈকুণ্ঠ-পরিকর-কীর্তন-শ্রবণ, বৈকুণ্ঠ-লীলাকথা-শ্রবণ শ্রীমদ্ভাগবতের সুষ্ঠুভাবে শ্রবণ হইতেই শুদ্ধসত্ত্ব-নির্মল জীব হৃদয়ে উদিত হয়। তখন হৃদয়কে বৃন্দাবনের সহিত অভিন্ন জানিতে পারা যায়। সেখানে কৃষ্ণচন্দ্রের অবস্থিতি।