সেই গ্রামে গৃহস্থ-সন্ন্যাসী এক আছে।
পথের সমীপে ঘর জাহ্নবীর কাছে॥
গৃহস্থ সন্ন্যাসী অর্থাৎ গৃহী বাউল বা ঘরপাগ্লা হইয়া জগতে ‘ত্যাগী’ বলিয়া পরিচয় দেয় ।তামসিক তন্ত্রগুলি এই প্রকার দারী সন্ন্যাসী বা ব্যভিচারীর প্রশ্রয় দেয় ।সোণার পাথর-বাটীর ন্যায় ত্যাগীর পোষাকে ঘর-পাগ্লাগণ গৃহীবাউল হইয়া শাক্তেয় মতের সাহায্যে রক্তবস্ত্র পরিধান পূর্বক সেবাদাসী, পত্নী প্রভৃতি সংরক্ষণের ব্যবস্থা শাস্ত্রসঙ্গত বলিয়া পরিচয় দেন ।বর্তমান কালে শ্রীমান্ অন্নদাচরণ মিত্র গৃহস্থ হইয়া রাতুল বস্ত্র পরিধান করেন এবং বৃন্দাবনবাসী শ্ৰীযুক্ত মধুসূদন গোস্বামী গৃহস্থাভিমান করিয়া প্রচারক-সূত্রে রাতুল বসন পরিতেন ।ত্যাগীর গৈরিক বসন—মর্যাদাপথে সন্ন্যাস-বিধির অন্তর্গত ।যেরূপ মধ্যযুগের সকল বৈষ্ণবাচার্যই কাষায় বস্ত্র ব্যবহার করিয়াছেন ।অনুরাগ-মার্গের প্রবর্তক শ্রীরূপ-সনাতন স্বীয় স্বভাবজাত পারমহংস্য-ধর্ম প্রচার করিতে গিয়া শ্রীগৌরসুন্দরের একদণ্ড সন্ন্যাসের পক্ষপাতী ছিলেন না ।শ্রীগোপাল ভট্টগোস্বামীর শ্রীগুরুদেব ত্রিদণ্ডিসন্ন্যাসিপ্রবর শ্রীপ্রবোধানন্দ সরস্বতী আচার্যোচিত কাষায় বসন পরিধান করিয়া পারমহংস্য-বেষের অধিকতর মহত্ত্ব ও অনুরাগ-পথের শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করিয়াছেন ।শ্রীরূপানুগ শ্রীমঞ্জীবচরণ আচার্যোচিত উপদেশ প্রদর্শনকালে ছল-পারকীয়বাদিগণের বিষদন্তোৎপাটনের জন্য পারকীয় বিচারের বোধ-সৌকর্যার্থ স্বকীয় প্রকাশ প্রদর্শন করিয়াছেন ।কিন্তু শ্রীজীবপাদের স্বকীয়-বিচার চিন্ময় জগতে পরকীয় মতের পরমোজ্বলতা স্থাপন করিয়াছে মাত্র।