Normal view
Book Lang.: বাংলা
English
संस्कृता वाक्
Translation

শ্লোক 107

Language: বাংলা
Language: English Translation
  • এই ব্যাখ্যা করে ভাষ্যকারের সমাজে
    মুক্তসব লীলাতত্ত্ব কহি
    ' কৃষ্ণ ভজে

    শুদ্ধদ্বৈত-বিচারাচাৰ্য সর্বজ্ঞ বিষ্ণুস্বামিপাদ বলেন,—“মুক্তা অপি লীলয়া বিগ্রহং কৃত্বা ভগবন্তং ভজন্তে’’। নিত্যমুক্ত পুরুষগণ মায়াবাদাদি সমস্ত পার্থিব চিন্তা পরিত্যাগ করিয়া নিত্যলীলাময় ভগবানকে নিত্যকাল ভজন করেন। কিন্তু পরবর্তিকালে শ্ৰীকণ্ঠ প্রভৃতি শৈব-বিশিষ্টাদ্বৈতিগণ ও তাঁহাদের অনুচর অপ্যয়-দীক্ষিতাদি নির্বিশিষ্ট কেবলাদ্বৈতবাদী শঙ্করাদির বিচার গ্রহণ করিয়া নশ্বর ভক্তির পরিণাম নির্বিশেষ কল্পনা করেন।সেই নির্বিশেষ-কল্পনায় যাঁহারা সন্তুষ্ট না হইয়া ঐকান্তিক বিচারক্রমে কৃষ্ণের ভজন করেন, তাঁহারাই শৈব-বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ হইতে মুক্ত হন ও শুদ্ধাদ্বৈতবাদের বিচার-প্রণালীর পরিণাম, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদের আংশিক ভাব হইতে মুক্ত হইয়া পূর্ণপুরুষ আধোক্ষজ কৃষ্ণের পঞ্চরসের সর্বশ্রেষ্ঠ মধুর রসের পারকীয় ভাবে ভজন করিয়া থাকেন। ‘ভাষ্যকার’ শব্দে বোধায়নের অনুগত বিশিষ্টাদ্বৈত-বিচারপর শ্রীভাষ্য-রচয়িতা শ্রীরামানুজ।তিনি তাঁহার বেদার্থ সংগ্রহ-গ্রন্থে বৌধায়ান, টঙ্ক, দ্রাবিড়, বোপদেব, কপর্দ্দী ও ভারতী প্রভৃতির বিভিন্ন মতের বিচারের কথা উল্লেখ করিয়াছেন। সূত্রমধ্যেও আত্রেয়ী, আশ্মরথ্য, ঔড়লোমী, কার্ষ্ণজিনি, কাশকৃৎস্ন, জৈমিনী ও বাদরী প্রভৃতির বিভিন্ন বিচার-প্রণালী পরমার্থের পরস্পর বিচারপার্থক্য প্রদর্শন করে।শঙ্কর ও তাঁহার অনুগত কেবলাদ্বৈতবিচারপর জনগণ নানা মতবাদের অবতারণা করিয়াছেন।ভক্তিপথাশ্রিত চারি সম্প্রদায়ের বৈষ্ণবগণের চারি প্রকার ভাষ্য কেবল নির্বিশেষপরত্বের অনুমোদন করেন নাই।বৌদ্ধবিচারের আনুগত্যে লিঙ্গায়েৎ-সম্প্রদায়ের ভাষ্য ও তদনুবর্তী শঙ্কর-সম্প্রদায়ের ভাষ্যসমূহ ভজনের নিত্যত্ব অস্বীকার করায় তাঁহাদের বিচারে মুক্তাবস্থায় নির্বিশেষ জাড্যই উদ্দিষ্ট হইয়াছে।শ্ৰীকণ্ঠ-ভাষ্যে যে দাস্যমার্গের কথা বর্ণিত হইয়াছে, উহাও পরিণামে নির্বিশেষকেই উচ্চ পদবী প্রদান করিয়াছে। অমুক্ত পুরুষগণের ভগবানের লীলাবোধে অধিকার নাই, কেননা তাঁহারা প্রাকৃত আধ্যক্ষিক বিচার লইয়াই উন্মত্ত।যাঁহারা অদ্বৈত প্রভুকে নির্বিশেষ-বিচারপর বলিয়া জানেন, তাঁহারা ভক্তির কোন সন্ধান পান নাই।শ্রীঅদ্বৈত-প্রভু পূর্বপক্ষ বিচারে কেবলাদ্বৈত-মতবাদের বিচার বিভ্রান্তি প্রদর্শন করিবার জন্য শ্রীগৌরসুন্দরের নিকট বিষয়ে সংশয় স্থাপন ও পূর্বপক্ষ করিয়া সিদ্ধান্ত ও সঙ্গতি জগৎকে বিতরণ করিয়াছেন। মূঢ় ব্যক্তিগণ পঞ্চাঙ্গ ন্যায়ের আদি তিনটী অঙ্গে আবদ্ধ থাকিয়া যে সিদ্ধান্ত ও সঙ্গতি কল্পনা করেন, উহা আধ্যক্ষিক ভিত্তিতে অভ্যুন্নত। নিত্যভজনকারী ভাষ্যকারগণ এরূপ আধ্যক্ষিক বিচারে আবদ্ধ না থাকিয়া আধোক্ষজ-ধারা গ্রহণ-পূর্বক মুক্তগণের নিত্য বৈচিত্র্য বর্ণন করিয়াছেন। অমুক্ত আধ্যাক্ষিকগণ সে বিচার করিতে পারে না।

    তথ্য।“ভক্ত্যে জীবন্মুক্ত গুণাকৃষ্ট হঞা কৃষ্ণ ভজে।’’ (—চৈঃ চঃ ম ২৪শ); ব্রহ্মভূতঃ প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি।সমঃ সর্বেষু ভূতেষু মদ্ভক্তিং লভতে পরাম্ ॥(—গীতা ১৮/৫৪)।

Page execution time: 0.0375170707703 sec