যাবতীয় বৈকি-বিধি-নিষেধ, সকলই ভক্তির অনুগত, ইহাতে অবিশ্বাসীর কৃষ্ণসেবা-বৈমুখ্যহেতু দুর্গতি-লাভ—
যত বিধি-নিষেধ—সকলি ভক্তিদাস।
ইহাতে যাহার দুঃখ, সেই যায় নাশ॥
শ্রীগৌরসুন্দরের শুক্লাম্বরের নিকট হইতে আতপ ও উষ্ণের বিচার-রহিত হইয়া সমগ্রনৈবেদ্য-দানবিধি অতিক্রমপূর্বক অনুরাগবশে যে গ্রহণ-লীলা, উহাই সকল পাঞ্চরাত্রিক বৈধভক্তির অর্চন-পথের একমাত্র পরম ফল বৈদিক যাবতীয় বিধিনিষেধ, সকলই ভক্তির অনুকুলচেষ্টা মাত্র, সুতরাং প্রতিকূল-চেষ্টা হইতে সহস্র যোজন দূরে অনুরাগ-পথের ভক্ত অবস্থান করায় তাঁহারা কোন দিনই বিধিপথের উল্লঙ্ঘন করেন না। কিন্তু বিধি-ভক্তির সাধ্য ব্যাপারে নিরন্তর অবস্থান করিয়া অনুরাগ-পথে কৃষ্ণসেবারত থাকেন। যে-সকল মূঢ় ব্যক্তি আধ্যক্ষিক বিচার অবলম্বনপূর্বক অনুরাগ-পথের সেবা বুঝিতে অসমর্থ হয়, সেই আধ্যক্ষিকজনগণ কৃষ্ণসেবাবৈমুখ্য লাভ করে। তজ্জন্য শ্রীকৃষ্ণের গীতে ‘অপি চেৎ সুদুরাচারো’ শ্লোকের আবাহন। তাই বলিয়া পাপজীবন বা উচ্ছৃঙ্খলতাময় অপস্বার্থপরতা কখনই সহজ-ভক্তিসাধ্য ব্যাপার বলিয়া গৃহীত হইতে পারে না;কিন্তু বিষয়াসক্ত প্রাকৃত সহজিয়া ইহা বুঝিতে পারে না পারিয়া শুদ্ধভক্ত ও ভক্তির প্রতি বিদ্রোহ করিয়া নরক-‘পথের যাত্রী হন।