মহাপ্রভুর নিত্যানন্দ ও হরিদাসকে সর্বত্র কৃষ্ণভজন,
কৃষ্ণকীর্তন ও কৃষ্ণশিক্ষা-প্রচারার্থ আদেশ—
একদিন আচম্বিতে হৈল হেন মতি।
আজ্ঞা কৈল নিত্যানন্দ-হরিদাস-প্রতি॥
যাঁহারা অকিঞ্চন হইতে পারেন, তাঁহারা কোন বস্তুর জন্য লোভপরবশ হন না। অকিঞ্চন না হইলে বাস্তব বস্তুর প্রয়োজন বোধ হয় না। নশ্বর-বস্তু-সমূহের বিক্রম তাঁহাদিগকে প্রলুব্ধ করে। শ্রীনিত্যানন্দ-প্রভু স্বাধ্যায়নিরত ব্রাহ্মণ-কুলে অবতীর্ণ। শ্রীঠাকুর হরিদাসের জাগতিক পরিচয়ে তাদৃশ বিপ্রকুলোৎপন্নতা ও তাদৃশ আনুষ্ঠানিক ব্রাহ্মণতা ছিল না। শ্রীচৈতন্যদেবের প্রকটকালে ভারতের বিভিন্ন স্থানে শকজাতি, গ্রীকজাতি ও যাবনিক আচারবিশিষ্ট জাতি-সমূহ বসতি স্থাপন করিয়াছিল। অসিন্ধুতটবাসিবৈদেশিক জাতি-সমূহে বাসস্থলী হওয়ায় নবদ্বীপনগরেও মানবগণের মধ্যে বৈষম্য-বিচার প্রবল ছিল। তজ্জন্য প্রচারকসূত্রে ভগবান্। গৌরসুন্দর উভয়-বিশ্বাস সম্পন্ন সামাজিকগণের মধ্যে প্রচারকার্যে ভগবদ্ভজন-পরায়ণ পুরুষোত্তমদ্বয়কে নিযুক্ত করেন। আর্যাচার ও যাবনিক আচারসম্পন্ন জনগণ একে অপরের বাক্যে কর্ণপাত করিবেন না জানিয়া উভয়েরই ভগবদ্ভক্তিতে সমধিক অধিকার আছে, জানাইবার জন্য উভয়কেই হরিকীর্তনের যোগ্যতা প্রদান করেন।