Normal view
Book Lang.: বাংলা
English
संस्कृता वाक्
Translation

শ্লোক 251

Language: বাংলা
Language: English Translation
  • জয় জয় নিজনাম-বিনোদ আচার্য।
    জয় নিত্যানন্দ চৈতন্যের সর্বকাৰ্য

    “আচার্যং মাং বিজানীয়ান্নাবমন্যেত কর্হিচিৎ। ন মর্ত্যবুদ্ধ্যাসূয়েত সর্বদেবময়ো গুরুঃ॥’’ “আপনি আচরি ধর্ম জীবেরে শিখায়।’’ শ্রীগৌরসুন্দর, শ্রীনিত্যানন্দপ্রভু এবং শ্রীঅদ্বৈত প্রভু—ইঁহারা বিষ্ণুতত্ত্ব। শ্রীচৈতন্যদেব পরম পরাৎপরতত্ত্ব। শ্রীনিত্যানন্দপ্রভু—পরাৎপরতত্ত্ব এবং শ্রীঅদ্বৈতপ্রভু—পরতত্ত্ব। শ্রীগৌর-লীলায় ইঁহারা সকলেই নিজ আচরণ দ্বারা নামবিনোদ লীলার আচার ও প্রচার করিয়াছেন। যাঁহাদিগের নিজাচরণ শ্রীচৈতন্যশিক্ষার অনুকূল হয়, তাঁহারাই শ্রীনিত্যানন্দের অধিকারী হইবার জন্য শ্রীনিত্যানন্দ-চরণাশ্রয় করেন। শ্রীনিত্যানন্দ শ্রীচৈতন্যের যাবতীয় কার্যই——নিজ নামবিনোদরূপ আচারে প্রতিষ্ঠিত। শ্রীনিত্যানন্দ-চৈতন্যের সর্বকাই—-আচার্য শ্রীঅদ্বৈত প্রভুর আচরণে সংশ্লিষ্ট। কেবলাদ্বৈত-বিচারমুখে শ্রীঅদ্বৈতের বাণী নামবিনোদের আচরণ হইতে পৃথক্‌ বলিয়াই শ্রীচৈতন্য-বাণীতে অচিন্ত্যভেদাভেদের সর্বকার্যের প্রতিষ্ঠা প্রচারিত হইয়াছে। সেই প্রচারানুকুলে আচরণ পরিত্যাগ করিয়া ‘আচার্যনন্দন’-পরিচয়াকাঙ্ক্ষ জগদীশ, বলরাম, স্বরূপ যে আচার-বহির্ভূত কার্যকরিয়াছেন, তাহা চৈতন্যনিত্যানন্দের সর্ব-কার্যের প্রতিকুল-চেষ্টা। কৃষ্ণ ও গোপালের আচরণ—নামবিনোদাচার্যের তাৎকালিক অনুকরণ মাত্র। শ্রীমদচ্যুতাচার্য শ্রীগদাধর পণ্ডিত গোস্বামীর আচরণের অনুগমন করায় তাহার আচার্যত্ব সর্বতোভাবে আদৃত। যে সময় নিজ-নাম-বিনোদাচার্য শ্রীঅদ্বৈত-প্রভুর আচরণের বিস্মৃতি তাঁহার অনুগত-পরিচায়কাঙ্ক্ষ-জনগণের মধ্যে প্রবলতা লাভ করিয়াছিল, সেই সময়ে শ্রীনিবাসাচার্য শ্রীগৌড়ীয়গণের আচার্য-পদবীতে প্রতিষ্ঠিত হন। বিষয়জাতীয় আচার্য প্রকাশাবতারগণ আশ্রয়জাতীয় আচার্যে শ্রীগৌর-নিত্যানন্দের সর্বকার্য নিহিত করিয়াছেন। বোম্বাই প্রদেশে নামদেবাচার্য নামকৌমুদীকার লক্ষ্মীধরের বিচারানুকূলে যে কীর্তন প্রচার করিয়াছিলেন, সেরূপ ঐশ্বর্যমিশ্র বিঠ্‌ঠলাচার্য সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ না করিলেও আচার্য শ্রীনিবাসের নামকীর্তনের সহিত নাম-রসাস্বাদন-লীলা গৌড়ীয়-বৈষ্ণব-জগৎ লাভ করিয়াছিলেন। অচিন্ত্যভেদাভেদবিচার আক্রমণ না করিয়া নিজ নামবিনোদাচার্যগণের অনুসরণে নামভজনপ্রচার-লীলা নাম-বিনোদাচার্যগণের অচিন্ত্যভেদাভেদ-বিচার গ্রহণের সুষ্ঠু আদর্শ। যঁহারা নিত্যানন্দ-চৈতন্যের সর্বকার্য করিবার জন্য সর্বতোভাবে প্রবিষ্ট, সেই শুদ্ধভক্তির স্রোতে শ্রীনামবিনোদের সর্বকার্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

    ‘নিজ-নাম’ শব্দে ‘কৃষ্ণনাম’ কেই লক্ষ্য করে। যে কৃষ্ণনাম-নামীর সহিত অভিন্ন—যে কৃষ্ণনামসঙ্কীর্তন-প্রচারক শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যদেব নামসঙ্কীর্তনকারিরূপে কৃষ্ণভজনের সর্বাঙ্গসৌন্দর্য প্রকটিত করিয়াছেন—যে নিত্যানন্দ গৌড়ীয়দিগের নামাচার্য হইয়া নিজ-নাম-বিনোদাচার্য শ্রীহরিদাসের সহিত শ্রীনবদ্বীপনগরের গৃহে গৃহে শ্রীচৈতন্যশিক্ষা প্রচার করিয়াছিলেন, সেই নিজ নাম-বিনোদাচার্যগণ নিত্যকাল জয়যুক্ত হউন। প্রাচীন-নবদ্বীপের পল্লীবিশেষ শ্রীগৌদ্রুমদ্বীপে যিনি শ্রীনিত্যানন্দের নামহট্ট স্থাপনপূর্বক আচরণ-নৈপুণ্য প্রদর্শন করিয়াছেন, সেই সকল নিজ-নামবিনোদাচার্যগণ একাধিকবার জয়যুক্ত হউন। “নদীয়া গোদ্রুমে নিত্যানন্দ মহাজন। পাতিয়াছে নামহট্ট জীবের কারণ॥’’ যে শ্রীগোদ্রুমে নিত্যানন্দের নামহট্ট-প্রচারের ফলে বর্তমান গৌড়ীয়ব্রুবজগতে অপরাধশূন্য নামভজনের কথা প্রচারিত হইয়াছে, সেই “নিজনাম” শব্দে গৌণ-নাম-পরিবর্জিত শব্দের অবিদ্বদ্‌রূঢ়িবৃত্তি সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত হইয়াছে। যে শ্রীনিত্যানন্দের নামহট্ট-স্থাপন প্রভাবে শ্রীঅদ্বৈতাদি ভক্তবৃন্দ নদীয়ার ঘাটে ঘাটে নামানন্দ বিতরণ করিয়াছিলেন, সেই অচিন্ত্যভেদাভেদ-বেদান্ত-প্রতিপাদ্য নামভজন-প্রণালীর আচরণশীল জনগণ সর্বতোভাবে জয়যুক্ত হউন।

Page execution time: 0.0633769035339 sec