কোটি কোটি জন্মে যত আছে পাপ তোর।
আর যদি না করিস,—সব দায় মোর॥
ভগবৎসেবোন্মুখ জনগণ জড়ভোগে বিরত হইয়া কৃষ্ণার্থে অখিলচেষ্টাবিশিষ্ট হন। তখন আর তাঁহাদের সংসারে পাপ পুণ্যলাভের জন্য ভোগ প্রবৃত্তি থাকে না। সেইকালে ভক্ত আত্মসমর্পণ করিয়া চিদানন্দময় অনুভূতিতে অনুক্ষণ ভগবৎসেবাই করিয়া থাকেন। স্বরূপজ্ঞানলব্ধ জীব মায়া-বন্ধন মুক্ত হইয়া তাঁহাদের যাবতীয় অনুষ্ঠান ভগবৎসেবার উদ্দেশে বিহিত করায় তাঁহাদের স্নান, ভোজন, নিদ্রা প্রভৃতি সকল কার্যই কৃষ্ণসেবাতাৎপর্যপর হইয়া বৈকুণ্ঠানুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেইকালে বদ্ধজীবের কোটি কোটি জন্মের পাপ বিদূরিত হয়। সকল পাপ-এবং সঞ্চিত কুভোগাদি সমস্তই ভগবন্মায়ায় বিলীন হয়। মায়ার বিক্ষেপাত্মিকা ও আবরণীবৃত্তি দুর্বল জীবের হরিবিমুখতা পরিহার করিয়া ভক্তের উপর বিক্ৰম প্ৰকাশ করিতে পারেনা। আত্মসমর্পিত স্বরূপোপলব্ধ ভক্ত অচিরেই বিমুক্তির ক্রোড়ে লালিতপালিত হইয়া কোন প্রকার পাপপুণ্যাদির প্রশ্রয় দেন না। “সর্বধর্মান্ পরিত্যজ্য” শ্লোক দ্বারা কৃষ্ণের এই অভিব্যক্তি জীবকুলের সন্তাপ নাশক।