দুই প্রভুর বাক্যে সুজনগণের আনন্দ এবং নানাজনের নানারূপ করুন—
এই বোল বলি’ দুইজন চলি’ যায়।
যে হয় সুজন, সেই বড় সুখ পায়॥
সুজন, —ভগবদ্ভক্ত। যাঁহারা উচ্চাভিলাষী হইয়া আরোহবাদ আশ্রয় করেন, তাঁহাদিগকে ‘ব্রাহ্মণ’ বলা যায়; আর যাঁহারা ‘আরূঢ়’ হইয়া আরোহবাদের অকর্মণ্যতা উপলব্ধি করেন এবং তৎফলে তৃণাদপিসুনীচ-ভাব গ্রহণ করিয়া প্রপঞ্চের যাবতীয় লোভনীয় বস্তুর আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগপূর্বক তরুর ন্যায় সহ্যগুণসম্পন্ন হন এবং জগৎকে সম্মান প্রদানপূর্বক জাগতিক আত্মসম্মান প্রতিষ্ঠার অকর্মণ্যতা উপলব্ধি করেন, তাঁহারাই ‘সুজন’। কৃষ্ণোন্মুখ ব্যক্তিগণই ‘সুজন’, কৃষ্ণেতর-ঐশ্বর্যপর-ভিক্ষুকগণই বুভুক্ষু বা মুমুক্ষু ‘ব্রাহ্মণ’ । যে ব্রাহ্মণ---সেবাপর, তিনিই সুজন। যাঁহার সেবাপরতা নাই, তিনি ‘সুজন’-সংজ্ঞার পরিবর্তে মায়াবাদী দুর্জন। তজ্জন্যই শাস্ত্র সুজনগণকে বলেন,—“শ্বপাকমিব নেক্ষেত লোকে বিপ্রমবৈষ্ণবম্। বৈষ্ণবো বর্ণবাহ্যোঽপি পুনাতি ভুবনত্রয়ম্॥’’ কৃষ্ণোন্মুখতাই জগতে সৌজন্যের আকর। সৌজন্য-ভূষিত জনগণ কৃষ্ণসেবার পরামর্শে পরমানন্দ লাভ করেন।