প্রভু-আদেশে ভক্তগণের নিতাইর কৌপীন সাদরে শরে বন্ধন—
পাইয়া প্রভুর আজ্ঞা সর্বভক্তগণ।
পরম আদরে শিরে করিলা বন্ধন॥
মহাপ্রভুর আজ্ঞায় ভক্তগণ নিত্যানন্দের লজ্জা-বসনের চীরগুলি মস্তকে বাঁধিলেন ও প্রভুর আজ্ঞায় পরম যত্নে তাহা নিজ গৃহে লইয়া গিয়া প্রত্যহ পূজাসহকারে সমাদর করিতে লাগিলেন। ভগবানের বা ভক্তের নাভির নিম্নপ্রদেশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সংশ্লিষ্ট বস্তুগুলিতে নিজ অধমাঙ্গের সহ সমান বুদ্ধি করা ভক্তিশাস্ত্রের সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। পূজ্যগণের পদধূলি, অধোবাস প্রভৃতি ভক্তি-পিপাসু জনগণের ভজনবল। তাহাতে সমজ্ঞান বা ঘৃণা আরোপিত হইলে ভক্তিপথের প্রথম সোপান ‘শ্রদ্ধা’র ব্যাঘাত হয়। “ভক্তপদধূলি আর ভক্তপদ-জল। ভক্ত-ভুক্ত শেষ,—এই তিন সাধনের বল॥’’ (চৈঃ চঃ অ ১৬ (৬০)॥“ছাড়িয়া বৈষ্ণব সেবা, নিস্তার পেয়েছে কেবা”—এই বিচারে অবস্থিত না হওয়া পর্যন্ত বিষ্ণুভক্তি লাভের কোন সম্ভাবনা নাই। নিজ মল-মূত্র ও নিজাপেক্ষা নিম্নবিচারবিশিষ্ট জনগণের মল-মূত্রের সহিত পূজ্য-জনের মল-মূত্রকে সমধারায় বিচার করা কর্তব্য নহে। তাদৃশ বিচার উপস্থিত হইলে হরি-গুরু-বৈষ্ণব-সেবার ব্যাঘাত হয়। তাই বলিয়া যাহা হরি-গুরু-বৈষ্ণব নহে, তাহাকে হরি-গুর-বৈষ্ণব জ্ঞান করিলে শ্রদ্ধাবানের পরিবর্তে অশ্রদ্দধান হইয়া শ্রদ্ধেয় জনগণের অনুগ্রহ হইতে বঞ্চিত হইতে হয়। উহাই সেবা-বিমুখতা বা অভক্তি।