বেদের অগম্য নিত্যানন্দের চরিত্র।
সর্বজীব-জনক, রক্ষক, সর্বমিত্র॥
নিত্যানন্দ-চরিত্র বেদপাঠী ‘তত্ত্ববিদ্গণেরও দুর্গম বস্তু। এই নিত্যানন্দ হইতে মূল মহাবৈকুণ্ঠে বাসুদেবের যে সঙ্কর্ষণ রূপ পাঞ্চরাত্রগণ বিচার করেন, তাহা নিত্যানন্দের আংশিক পরিচয় নহে। তিনি স্বয়ংপ্রকাশ বস্তু। তাঁহা হইতেই কারর্ণার্ণবশায়ী বিষ্ণু, গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণু ও ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু— ইঁহারা অর্ণবত্রয়ে ভাসিয়া থাকে। ব্যষ্টিবিষ্ণু, সমষ্টি-বিষ্ণু ও কারণ-বিষ্ণু—অনিরুদ্ধ, প্রদ্যুম্ন ও সঙ্কর্ষণরূপে মহাবৈকুণ্ঠে বৈকুণ্ঠ ও জগতের কারণরূপে প্রতিষ্ঠিত। সন্ধিনীশক্ত্যধিষ্ঠিত বিষ্ণু-বিগ্রহ হইতেই কারণোদকশায়ী বিষ্ণু এবং তাঁহা হইতে নৈমিত্তিক অবতারাবলী ও তটস্থশক্তি পরিণামে পরিচিত জীবতত্ত্বের উদয় বলিয়া তিনি সর্ব-জীব-জনক। তিনি সকল জীবের পালক বলিয়া ‘রক্ষক’ ও সকলেরই একমাত্র আশ্রয় বলিয়া ‘বন্ধু’। নিত্যানন্দ-প্রভু ঈশ্বর। জীবগণ—তাঁহার ভেদাংশ, তটস্থ শক্তিপরিণত সেবক। “চিচ্ছক্তিবিলাস এক-‘শুদ্ধসত্ত্ব’ নাম। শুদ্ধ সত্ত্বময় যত বৈকুণ্ঠাদি ধাম॥ ষড়্ বিধৈশ্বর্য তাঁহা সকল চিন্ময়। সঙ্কর্ষণের বিভূতি সব,--জানিহ নিশ্চয়॥ ‘জীব’ নাম তটস্থাখ্য এক শক্তি হয়। মহাসঙ্কর্ষণ—সর্ব জীবের আশ্রয় ॥’’( চৈঃ চঃ আঃ ৫/৪৩-৪৫ )।