তোমারে যে করে শ্রদ্ধা, সে করে আমারে।
নিরন্তর থাকি আমি তোমার শরীরে ॥
কনিষ্ঠাধিকারী ব্যক্তি ভক্ত ও অভক্ত চিনিবার শক্তি লাভ না করায় শ্রদ্ধার সহিত বিবিধ উপচারে ভগবদ্বিগ্রহের অর্চন করিয়া ধিকার উন্মত হইলে ভগবান্ , ভক্ত, বালিশ এবং বিদ্বেষী—এই চুতুর্বিধ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করিয়া যথাক্রমে প্রেম, মিত্রতা, কৃপা ও উপেক্ষার অনুশীলন-দ্বারা ভগবানের পূজা বিধান করিয়া থাকেন। সেইকালে তিনি ভগবদ্ভক্তের হৃদয়-মন্দিরে ভগবদধিষ্ঠানের প্রকাশ দর্শন করিয়া তাঁহাকে প্রণাম করেন। তাঁহার প্রণামের দ্বারাই ভক্তের সেব্য প্রভুর সুষ্ঠু প্রণতি বিহিত হয়; কিরূপভাবে ভগবৎসেবা করিতে হইবে, সেই সকল বিষয়ে ভগবদ্ভক্তের নিকট উপদেশ লাভ করিবার সুযোগ পান। তাহার কনিষ্ঠাধিকারে একদেশ-দৃষ্টিক্রমে প্রকৃত সৌভাগ্যের উদয় হয় না। বৈষ্ণব-সঙ্গ-প্রভাবে জীবের যাবতীয় ভগবদ্বিমুখতা ও ভক্ত-বিমুখতা ক্ষীণতা লাভ করে। উত্তমাধিকারীর সেবাবিধানক্রমে তাঁহাতে ভগবদধিষ্ঠান দর্শন করিয়া জীব কৃতার্থ হয়। ঠাকুর হরিদাস মহাভাগবতের আদর্শস্থানীয় হওয়ায় তাঁহার প্রতি সুদৃঢ়বিশ্বাস-সম্পন্নজনগণ প্রকৃত প্রস্তাবে ভগবানের প্রতি অচলা শ্রদ্ধাবিশিষ্ট—ইহা জানাইবার জন্য মহাপ্রভু বলিলেন,-“ঠাকুর হরিদাসে শ্রদ্ধাবান্ জনগণ আমাতেই শ্রদ্ধান্বিত। ভগবান্ হরিদাসের চিন্ময় কলেবরে সর্বদা সেবিত। ভক্তের শরীর চিন্ময়। জড়বুদ্ধিসম্পন্ন, অহঙ্কার-নিরত অপরাধী জনগণ ভগবদ্দেহ ও ভক্তদেহকে অচিৎ-পরমাণু-গঠিত মনে করিয়া নিরয়যন্ত্রণা লাভ করিবার আরাধনা করেন।’’