‘মুরারিগুপ্ত’ নামের যৌগিক তাৎপর্য ‘—
মুরারি’ বৈসয়ে গুপ্তে ইহার হৃদয়ে।
এতেকে ‘মুরারিগুপ্ত’ নাম যোগ্য হয়ে ॥
মুরারিগুপ্তের হৃদয়ে ভগবান্ ‘মুরারি’ (শ্রীচৈতন্যদেব) গুপ্তভাবে সর্বদা বাস করেন, এজন্য ভক্ত মুরারি ‘মুরারিগুপ্ত’ নামে অভিহিত হইয়াছিলেন। যে-সকল ‘মুরারি’-নামধারী ভক্তি বিদ্বেষি-জন আপনাদিগকে ‘মুরারিগুপ্ত’ মনে করিয়া নরকের পথে অগ্রসর হন, তাঁহাদের শরীরে কখনই গুপ্তভাবে মুরারি অবস্থান করেন না; তাঁহারা কেবল লোক দেখাইয়া মুরারির অবস্থান জানান। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে মুরারি তাঁহাদের হৃদয় হইতে বহু দূরে অবস্থান করিয়া তাঁহাদিগকে কনক-কামিনী-প্রতিষ্ঠাশা লোলুপ করান । এতাদৃশ জনগণের গর্হণই শ্রীগৌরসুন্দরের অভিপ্রেত । মুরারি-দাস্য বঞ্চিত হইলে মুরারি বিমুখ-জনগণ প্রভুকে তাসুল খাওয়াইবার পরিবর্তে স্বয়ং মল চর্বণ করিয়া বাসেন । তাঁহারা মাদক-দ্রব্যের বশবর্তী হইয়া কোন দিনই মুরারিগুপ্তের দাস হইতে পারেন না। আধুনিক যুগে শ্রীগৌরাঙ্গের অবতার’ বলিয়া প্রচারিত হইবার দুর্বাসনায় “অমিয়-নিমাই-চরিত’’ লেখককে ‘মুরারিগুপ্তের অবতার’ বলিয়া যাঁহারা বিড়ম্বনা করেন, তাঁহাদের অপরাধ ব্যতীত আর কিছুই হয় না।