ভক্তি ব্যতীত কর্ম,জ্ঞান,যোগ ব্রহ্মচর্যাদির নিস্ফলতা—
সেই নবদ্বীপে আর কত কত আছে।
তপস্বী,সন্ন্যাসী, জ্ঞানী,যোগী মাঝে মাঝে ॥
প্রাপঞ্চিক-বিচার-যুক্ত হইলে ভগবানের লীলার কথা বুঝা যায় না। কিন্তু বহির্দর্শনে নিরপেক্ষ হইয়া প্রাকৃতবিচার-রহিত জনগণ ভগবানের বিলাস-সমূহ দর্শন করিতে পারেন। ‘যেষাং স এষ ভগবান্ দয়য়েদনন্তঃ সর্বাত্মনাশ্রিতপদো যদি নির্ব্যলীকম্। তে দুস্তরামতিতরন্তি চ দেবমায়াং নৈষাং মমাহমিতিধীঃ শ্বশৃগালভক্ষ্যে॥’’ অর্থাৎ ভগবান্ অনন্তদেব যাঁহাদের প্রতি কৃপা করেন, যদি তাঁহারা কপটতারহিত হইয়া কায়মনোবাক্যে ভগবচ্চরণে শরণাপন্ন হন, তাহা হইলে সেই দুস্তরা অলৌকিকী মায়াসমুদ্র উত্তীর্ণ হইতে পারেন। এই সকল শরণাগত ভক্তের কুক্বুর শৃগাল ভক্ষ্য দেহে “আমি ও আমার’’ বলিয়া অভিমান থাকে না (ভাঃ ২/৭/৪২)। “নায়মাত্মা প্রবচনেন লভ্যো ন মেধয়া ন বহুনা শ্রুতেন। যমেবৈষ বৃণুতে তেন লভ্যস্তস্যৈষ আত্মা বিবৃণুতে তনং স্বাম্॥’’ অর্থাৎ এই পরমাত্মাকে বেদাদি-শাস্ত্রাধ্যয়নের দ্বারা লাভ করা যায় না, ধারণাশক্তি অথবা বহু শাস্ত্র শ্রবণের দ্বারাও লাভ করা যায় না। যে ব্যক্তি তাঁহাকেই একমাত্র প্রভু বলিয়া বরণ করেন, কেবল সেই ব্যক্তির সকাশেই তিনি স্বীয় অপ্রাকৃত-স্বরূপ প্রকাশ করেন এবং সেই ব্যক্তিই তাঁহাকে লাভ করিতে পারেন। (—মুণ্ডক ৩/২/৩, কঠ ২/২৩)।