ভক্তিযোগে তোমারে পাইল তারা সব।
সেইখানে মরে কংস দেখি’ অনুভব ॥
পুরনারীর কৃষ্ণদর্শন- শ্রীকৃষ্ণ অক্রর-কর্তৃক মথুরায় নীত হইয়া গোপবৃন্দ-সমভিব্যাহারে যখন মথুরাপুরীর বিচিত্র শোভা দর্শন করিতে করিতে গমন করিতেছিলেন, তখন পুরস্ত্রীগণ স্ব-স্ব-হস্তস্থিত কর্ম পরিত্যাগ করিয়া কৃষ্ণসন্দর্শনার্থ কেহ প্রাসাদোপরি, কেহ বা বহির্দ্বারে আগমন করিতে লাগিলেন। তাঁহারা পূবেই কৃষ্ণের বিষয় অবগত ছিলেন; অধুনা তদ্দর্শনপূর্বক মনোব্যথা দূর করিলেন। প্রাসাদারূঢ়া স্ত্রীগণ হর্ষভরে কৃষ্ণের উপরে পুষ্পবৃষ্টি এবং নিরন্তর কৃষ্ণদর্শন-সৌভাগ্যলাভের জন্য গোপীগণের প্রশংসা করিতে লাগিলেন।
মালাকারের কৃষ্ণদর্শন—শ্রীকৃষ্ণ কংস-সভায় প্রবিষ্ট হইবার পূর্বে সুবেশযুক্ত ও অনুলিপ্ত হইবার বাসনায় সুদামা মালাকারের গৃহে গমন করেন। সুদামা পাদ্য, অর্ঘ্য ও অনুলেপন দ্বারা শ্রীকৃষ্ণের পূজা ও স্তব করিলে শ্রীকৃষ্ণ তৎপ্রতি প্রসন্ন হইয়া তাহার অভিপ্রেত বর প্রদান করেন ( ভাঃ ১০/৪১ অঃ)। কুব্জার কৃষ্ণদর্শন---সুদামার গৃহ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইবার পর শ্রীকৃষ্ণঃ পথিমধ্যে কুজাকৃতি সৈরিন্ধ্রীকে অঙ্গবিলেপনপাত্র হস্তে আগমন করিতে দেখিয়া উহার নিকট অঙ্গবিলেপন প্রার্থনা করেন। কুব্জা শ্রীকৃষ্ণের রূপদর্শনে বিমুগ্ধা হইয়া তাঁহাকে ঘন অনুলেপন প্রদান করিলে পর শ্রীকৃষ্ণ ঐ ত্রিবক্ৰা সৈরিন্ধ্রীর পাদাগ্রদ্বয় চাপিয়া চিবুক ধারণ পূর্বক তাহার দেহষষ্ঠি উন্নত করিয়া তাহাকে রূপযৌবন-সম্পন্না উত্তমা প্রমদারূপে পরিণত করিলেন। তৎপরে কুজা শ্রীকৃষ্ণকে নিজ গৃহে লইবার অভিলাষ জানাইলে শ্রীকৃষ্ণ কংসবধান্তে তাহার ভবনে কিছুকাল অবস্থান করিয়া তাঁহার প্রার্থনা সম্পূরণ করিয়াছিলেন ( —ভাঃ ১০/৪২ অঃ )। যজ্ঞপত্নীগণের কৃষ্ণদর্শন—একদিন বৃন্দাবনে গোচারণ করিতে করিতে গোপবালকগণ ক্ষুধার্ত হইয়া শ্রীকৃষ্ণের নিকট ভোজ্য প্রার্থনা করিলে শ্রীকৃষ্ণ তাঁহাদিগকে যাজ্ঞিক বিপ্রগণের নিকট প্রেরণ করেন। বিপ্রগণ তাঁহাদের প্রার্থনা প্রত্যাখ্যান করেন। শ্রীকৃষ্ণ পুনরায় যাজ্ঞিক-পত্নীগণের নিকট অন্ন-প্রার্থনার্থ গোপবালকগণকে প্রেরণ করিলে বিপ্রপত্নীগণ চতুর্বিধ-অন্ন-সহ শ্রীকৃষ্ণসমীপে আগমন-পূর্বক তাঁহাকে ভোজ্য প্রদান করেন। (ভাঃ ১০/২৩)।