‘পাইব, পাইব' বলি’ করে মহানৃত্য॥
প্রেমেতে বিহ্বল হৈলা চৈতন্যের ভৃত্য ॥
প্রভুর মুখে ‘কোটি জন্মের পরে ভক্তি লভ্য হইবে এবং তাঁহার দর্শন-লাভ ‘ঘটিবে জানিয়া মুকুন্দ আনন্দিত হইলেন। যেহেতু ভগবদ্ভক্তগণের বিচারে মায়াবাদিগণের নিত্য বিনাশ সংঘটিত হয় বলিয়া কোনদিনই তাহারা ভক্তির অধিকারী হইবে না—এই ব্যবস্থার অধীন হইতে হইল না জানিয়াই মুকুন্দের পরমসুখ। জীবের নিত্যবৃত্তি ভক্তি নির্ভেদব্রহ্মানুসন্ধানের ফল-প্রাপ্তিকালে চিরতরে বিলুপ্ত হয়। সিদ্ধা ব্রহ্মসুখে মগ্না দৈত্যাশ্চ হরিণা হতাঃ এবং মহাপ্রসাদের অসম্মানে “ব্রহ্মবন্নির্বিকারং হি যথা বিষ্ণুস্তথৈব তৎ। বিকারং যে প্রকুর্বন্তি ভক্ষণে তদ্দ্বিজাতয়ঃ॥ কুষ্ঠব্যাধিসমাযুক্তাঃ পুত্ৰদারবিবর্জিৰ্তাঃ। নিরয়ং যান্তি তে বিস্প্রস্তস্মান্নাবর্ততে পূনঃ ॥’’ আরও—“যো বক্তি ন্যায়রহিতমন্যায়েন শৃণোতি যঃ । তাবুভৌ নরকং ঘোরং ব্ৰজতঃ কালমক্ষয়ম্’’ —প্রভূতি শ্লোকের বিচার মুকুন্দের চিন্তাস্রোতের মধ্যে আগত হওয়ায় যে নৈরাশ্য উপস্থিত হইয়াছিল, তাহা হইতে ‘কোটিজন্মে ভক্তিলাভ হইবে’—এই আশ্বাসবাণীতে উদ্ধার লাভ করিয়া মুকুন্দের পরানন্দ সুখের উদয় হইল। তিনি শ্রীচৈতন্যের অপার করুণা স্মরণ করিয়া প্রেমবিহ্বলিত চিত্তে প্রচণ্ড নৃত্য আরম্ভ করিলেন। দর্শন প্রাপ্তি ঘটিবে, ইহাই মকুন্দের উল্লাসের কারণ।