অদ্বৈত-প্রভুকে ‘বিষ্ণু’ জ্ঞানপূর্বক গৌরসুন্দরকে তদাশ্রিতা
‘শ্রীরাধা’-জ্ঞানকারীর ‘অদ্বৈতভক্তি’—দশাননের
শিবভক্তিবৎ অমঙ্গলজনক—
‘সর্ব প্রভু গৌরচন্দ্র, ইহা যে না লয়।
অক্ষয়-অদ্বৈতসেবা ব্যর্থ তা’র হয় ॥
শ্রীঅদ্বৈত প্রভু উপাদান কারণ বিষ্ণুতত্ত। তাঁহার সেবা-অক্ষয়। কিন্তু অদ্বৈত-সেব্য শ্রীগৌরসুন্দর সর্বসেব্য,-এই কথা স্বীকার না করিয়া অদ্বৈত-প্রভুকে মহাপ্রভুর ‘সেব্য’-বিচাররূপ অপরাধ করিতে গেলে অদ্বৈত-সেবার নিরর্থকতা হইয়া পড়ে । ঘৃণিত অদ্বৈত সেবকব্রুবগণ বলিয়া থাকেন যে, শ্রীগৌরভক্তগণ মহাপ্রভুর প্রতি ঐকান্তিক প্রকাশ করায় তাঁহারা অদ্বৈত সেবা-বিরোধী। “চৈতন্য-মালীর কৃপাজলের সেচনে। সেই জলে পুষ্ট স্কন্ধ বাড়ে দিনে দিনে॥ সেই জল স্কন্ধে করে শাখাতে সঞ্চার। ফলে ফুলে বাড়ে, —শাখা হইল বিস্তার॥ প্রথমে ত’ আচার্যের একমত গণ পাছে দুইমত হৈল দৈবের কারণ॥ কেহ ত’ আচার্যের আজ্ঞায়, কেহ ত’ স্বতন্ত্র। স্বমত কল্পনা করে দৈব-পরতন্ত্র॥ আচার্যের মত যেই, সেই মত সার। তাঁর আজ্ঞা লঙিঘ’ চলে, সেই ত’ অসার ॥ চৌদ্দ ভুবনের গুরু—চৈতন্য গোসাঞি। তাঁর গুরু—অন্য, এই কোন শাস্ত্রে নাই॥ মালিদত্ত জল অদ্বৈত -স্কন্ধ যোগায়। সেই জলে জীয়ে শাখা, ফল-ফুল হয়॥ ইহার মধ্যে মালি-পাছে কোন শাখাগণ। না মানে চৈতন্য মালী দুর্দৈব কারণ ॥ সৃজাইল, জীয়াইল, তারে না মানিলা। কৃতঘ্ন হইলা , তাঁরে ঙ্কন্ধ ক্রুদ্ধ হইলা ॥ ক্রুদ্ধ হঞা স্কন্ধ তারে জল না সঞ্চারে। জলাভাবে কৃশ শাখা শুকাইয়া মরে॥ চৈতন্যরহিত দেহ—শুষ্ক কাষ্ঠ সম। জীবিতেই মৃত সেই, মৈলে দণ্ডে যম। কেবল এগণ-প্রতি নহে এই দণ্ড । চৈতন্য-বিমুখ যেই, সেই ত’ পাষণ্ড ॥ কি পণ্ডিত, কি তপস্বী, কিবা গৃহী, যতি। চৈতন্য-বিমুখ যেই, তার এই গতি॥ যে যে লৈল শ্রীঅচ্যুতানন্দের মত। সেই আচার্যের গণ—মহাভাগবত॥ সেই সেই —আচার্যের কৃপার ভাজন। অনায়াসে পাইল সেই চৈতন্যচরণ॥’’ ( —চৈঃ চঃ আঃ ১২/৫, ৭-১০, ১৬ এবং ‘৬৬-৭৪)।