শ্রীকৃষ্ণ-নাম-শ্রবণ-কীর্তন-ভজন-ধ্যানোপদেশ—
বল কৃষ্ণ, ভজ কৃষ্ণ, শুন কৃষ্ণনাম ।
অহর্নিশ শ্রীকৃষ্ণচরণ কর’ ধ্যান ॥
কৃষ্ণেতর অন্য সমস্ত সিদ্ধান্তবিরুদ্ধ প্রজল্প ও রসাভাসাদি পরিত্যাগপূর্বক সর্বক্ষণ নিষ্কপট সেবোন্মুখ-জিহ্বায় কৃষ্ণনাম উচ্চারণ কর। বাহ্যজগতের বস্তুসমূহকে ভোক্তৃ-অভিমানে ভোগ্যজ্ঞানে ভোগ করিবার পরিবর্তে আপনাকে কৃষ্ণের নিত্য সেবোপকরণ জানিয়া সর্বক্ষণ কৃষ্ণের শুদ্ধ-নাম-কীর্তনানুকূল সেবানুষ্ঠানাদি-সম্পাদনে নিযুক্ত থাক। নিষ্কপটে সেবোন্মুখ কর্ণ-দ্বারা ভোগপর অনিত্য অচিৎ শব্দ-কোলাহল-শ্রবণের মূলে যে আত্মেন্দ্রিয়-তর্পণেচ্ছা, তাহা পরিহার করিয়া কৃষ্ণাভিন্ন শব্দব্রহ্ম কৃষ্ণনাম-কথা শ্রবণ কর। ইন্দ্রিয়জজ্ঞানে অনিত্য সুখলাভের আশা বিসর্জন করিয়া নিরন্তর সেবোন্মুখ শুদ্ধচিত্তে শ্রীকৃষ্ণপাদপদ্ম স্মরণ কর।
শ্রীহরির শ্রবণ, কীর্তন ও স্মরণ-কর্তব্যতা,—(ভাঃ ১/২/১৪ শ্লোকে শৌনকাদির প্রতি শ্রীসূতোক্তি—)
“তস্মাদেকেন মনসা ভগবানসাত্বতাং পতিঃ।
শ্রোতব্যঃ কীর্তিতব্যশ্চ ধ্যেয়ঃ পূজ্যশ্চ নিত্যশঃ॥”
অর্থাৎ ‘অতএব ভক্তিপ্রধান ধর্মই অনুষ্ঠেয় হওয়ায় একাগ্রমনে ভক্তবৎসল বাসুদেবেরই শ্রবণ, কীর্তন, মনন এবং অর্চন কর্তব্য।
(ভাঃ ২১ ৫ শ্লোকে পরীক্ষিতের প্রতি শ্ৰীশুকোক্তি—)
“তস্মাভারত সর্বাত্মা ভগবানীশ্বরো হরিঃ।
শ্রোতব্যঃ কীর্তিতব্যশ্চ স্মর্তব্যশ্চেচ্ছেতাভয়ম।”
অর্থাৎ ‘অতএব হে ভরতবংশাবতংস! যে ব্যক্তি অভয়পদ মোক্ষের আকাঙ্ক্ষা করে, তাহার পক্ষে সর্বাত্মা ভগবান পরমেশ্বর শ্রীহরিরই শ্রবণ, কীর্তন ও স্মরণ অবশ্য কর্তব্য।’
(ভাঃ ২/২/৩৬ শ্লোকে পরীক্ষিতের প্রতি শ্ৰীশুকোক্তি—)
“তস্মাৎ সর্বাত্মনা রাজন্ হরিঃ সর্বত্র সর্বদা।
শ্রোতব্যঃ কীর্তিতব্যশ্চ স্মর্তব্যো ভগবান্ নৃণাম্॥”
অর্থাৎ ‘অতএব হে রাজন্! সর্বাত্ম-দ্বারা সর্বত্র সর্বদা ভগবান্ শ্রীহরিরই শ্রবণ, কীর্তন এবং স্মরণ কর্তব্য।