শিষ্যগণের জিজ্ঞাসার উত্তরে প্রভু-কর্তৃক সর্ব বর্ণের ও বেদের কৃষ্ণতাৎপর্য-ব্যাখ্যান—
“সিদ্ধবর্ণসমান্নয়?” বলে শিষ্যগণ।
প্রভু বলে,—“সর্ব্ব-বর্ণে সিদ্ধ নারায়ণ॥”
সিদ্ধ বর্ণ-সমান্নায়—কলাপ বা কাতন্ত্র-ব্যাকরণের প্রথম সূত্র—“সিদ্ধো বর্ণসমান্নয়ঃ” অর্থাৎ স্বর ও ব্যঞ্জনবর্ণের পাঠক্রম—চির-প্রসিদ্ধ! প্রভুর ছাত্রগণ কলাপ-ব্যাকরণের প্রথম সূত্র উচ্চারণপূর্বক বলিতে লাগিলেন যে, বর্ণপাঠ-রীতি ত’ সুপ্রসিদ্ধ? তদুত্তরে প্রভু বলিলেন যে, সকল বর্ণ নিত্য-শুদ্ধ পূর্ণ-মুক্ত-চিন্ময়ী পরমুখা বিদ্বদ্রূঢ়ি-বৃত্তিতে নারায়ণকেই প্রতিপাদন করেন। আরোহ-পন্থী বা অধিরোহবাদী বর্ণের অজ্ঞরূঢ়ি-বৃত্তির সাহায্যে শব্দশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন, কিন্তু প্রভু অবতার-বিচার অবলম্বন করিয়া প্রত্যেক-বর্ণকেই ভগবাচক বলিয়া জানাইলেন। প্রত্যেক বর্ণকে অজ্ঞরূঢ়িবৃত্তির সাহায্যে মাপিতে গেলে বদ্ধজীব নারায়ণের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়ের উদ্দেশ লাভ করে, কিন্তু বর্ণের বিঢ়িবৃত্তি, প্রত্যেক বর্ণই যে সাক্ষাৎ মূর্তবিগ্রহ নারায়ণ ইহাই প্রতিপাদন করে। অজ্ঞরূঢ়িবৃত্তি আধ্যক্ষিক-জ্ঞানীকে প্রজল্পী করিয়া তুলে, আর সাক্ষাৎ স্বপ্রকাশ বাচ্যবস্তু শ্রীনারায়ণ বর্ণদ্বারা আপনাকে প্রকটিত করিয়া জীবকে হরিকীর্তনকারী করান।