Normal view
Book Lang.: বাংলা
English
संस्कृता वाक्
Translation

শ্লোক 248

Language: বাংলা
Language: English Translation
  • অহর্নিশ শ্রবণে শুনয়ে কৃষ্ণনাম।
    বদনে বোলয়ে কৃষ্ণচন্দ্রঅবিরাম

    শ্রীগৌরসুন্দর মহাভাগবত-বৈষ্ণবের লীলা প্রকাশ করিয়া সর্বত্র কৃষ্ণ ও কৃষ্ণসম্বন্ধি-কাষ্ণ দর্শন করিতে লাগিলেন। সাধারণ কৃষ্ণবিস্মৃত প্রাকৃত লোক যেরূপ জড়-প্রত্যক্ষাদিজ্ঞানে বিমূঢ় হইয়া কৃষ্ণদর্শনাভাবে কৃষ্ণেতর ভোগ-ভূমিকারূপ এই পঞ্চিক জগৎ দর্শন করে, মহাপ্রভু তদ্রূপ ভোক্তৃঅভিমানে ভোগ্য দর্শনের আদর্শ না দেখাইয়া কৃষ্ণবিমুখ ও বিস্মৃত বদ্ধজীবের পরিলক্ষিত এই প্রাণিজগৎ ও জড়-জগৎকে কৃষ্ণসেবোন্মুখ, মহা-ভাগবত-বৈষ্ণবের সচ্চিদানন্দ-কৃষ্ণময়ী দৃষ্টিতে দর্শন করিলেন। প্রত্যেক ভূত-হৃদয়ে উপাস্য বস্তু সশক্তিক কৃষ্ণের বিলাস প্রতীত হইতে লাগিল, সুতরাং বদ্ধ বিমুখ বিস্মৃত-জীবের ন্যায় অচিৎ জড়পরমাণুর ব্যবধান দর্শন না করায় সর্বত্র তুরীয় বৈকুণ্ঠ-গোলোক-দর্শনে তদ্রূপ-বৈভবসমূহ তাহাকে কৃষ্ণের ভোগসেবা-বিলাসদর্শনে বাধা দিল না॥

    (চৈঃ চঃ মধ্য ৮ম পঃ ২৭৪)

    “স্থাবর-জঙ্গম দেখে, না দেখে তার মূর্তি।
    সর্বত্র ফ্রয়ে তার ইষ্টদেব-মূর্তি॥”

    (ভাঃ ১১/২/৪৫, ৪৯-৫৪ শ্লোকে বিদেহরাজনিমির প্রতি নবযোগেন্দ্রের অন্যতম শ্রীহরির উক্তি—)

    “সর্বভূতেষু যঃ পশ্যেদ্ভগবদ্ভাবমাত্মনঃ।
    ভূতানি ভগবত্যাত্মন্যেষ ভাগবতোত্তমঃ॥”

    অর্থাৎ ‘যিনি নিখিল-বস্তুতে সর্বভূতের নিয়ন্ত্বরূপে অধিষ্ঠিত পরমাত্মার ভগবদ্ভাব-বিলাস, দর্শন করেন এবং পরমাত্মা ভগবান্ শ্রীহরিতে চিদ্বিলাস-বৈচিত্র্য দর্শন করেন তিনিই ‘উত্তম ভাগবত।

    “দেহেন্দ্রিয়প্রাণমনোধিয়াং যো জন্মপ্যয়ক্ষুদ্ভয়তর্ষকৃচ্ছৈঃ।
    সংসারধর্মৈরবিমূহ্যমানঃ স্মৃত্যা হরের্ভাগবতপ্রধানঃ॥”

    অর্থাৎ ‘সংসারে থাকিয়াও দেহ ইন্দ্রিয়, প্রাণ, মন ও বুদ্ধির জন্ম, নাশ, ক্ষুধা, ভয়, তৃষ্ণা ইত্যাদি সংসারধর্মে যিনি মোহিত অর্থাৎ আসক্ত হন না, সর্বদা হরিস্মৃতি-দ্বারা কুশলে থাকেন, তিনিই ‘ভাগবতপ্রধান’।’

    “ন কামকর্মবীজানাং যস্য চেতসি সম্ভবঃ।
    বাসুদেবৈকনিলয়ঃ স বৈ ভাগবতোত্তমঃ॥”

    অর্থাৎ ‘যিনি কৃষ্ণে অবস্থিত হইয়া শান্ত হন এবং কামকৰ্মবীজ যাঁহার চিত্তে উদ্ভূত হয় না, তিনিই ভাগবতোত্তম।

    “ন যস্য জন্মকর্মাভ্যাং ন বর্ণাশ্রমজাতিভিঃ।
    সজ্জতেঽস্মিন্নহম্ভাবো  দেহে বৈ স হরেঃ প্রিয়ঃ॥”

    অর্থাৎ ‘যে পুরুষের এই জড়দেহে জন্ম, কর্ম, বর্ণাশ্রম বা জাতিদ্বারা ‘অহং’-ভাব উৎপন্ন না হয়, তিনিই ‘হরির প্রিয়পাত্র’।’

    “ন যস্য স্বঃ পর ইতি বিত্তেষাত্মনি বা ভিদা।
    সবর্ভূতসমঃ শান্তঃ স বৈ ভাগবতোত্তমঃ॥”

    অর্থাৎ ‘যাঁহার বিত্তে ও দেহে ‘স্ব’ ও ‘পর’—এরূপ ভেদ নাই, যিনি সর্বভূতে সম ও শান্ত, তিনিই ভাগবতোত্তম।

    “ত্রিভুবনবিভবহেতবেঽপ্যকুণ্ঠস্মৃতিরজিত্মসুরাদিভির্বিমৃগ্যাৎ।
    ন চলতি ভগবৎপদারবিন্দাৎ লবনিমিষার্ধমপি যঃ স বৈষ্ণবাগ্র্যঃ॥”

    অর্থাৎ ‘হরিগতচিত্ত ব্রহ্মাদি দেবগণও যে-কৃষ্ণের অন্বেষণ করেন, যিনি ত্রিভুবন-প্রাপ্তির লোভেও সেই কৃষ্ণের পদারবিন্দ হইতে লব অর্থাৎ নিমিষার্ধও বিচলিত না হইয়া অকুণ্ঠস্মৃতি থাকেন, তিনিই ‘বৈষ্ণবাগ্রগণ্য।

    “ভগবত উরুবিক্রমাঙ্ঘ্রিশাখা-নখমণিচন্দ্ৰিকয়া নিরস্ততাপে।
    হৃদিকথমুপসীদতাং পুনঃ স প্রভবতি চন্দ্র ইবোদিতেঽর্কতাপঃ ॥”

    অর্থাৎ ‘শ্রীকৃষ্ণের উরুবিক্রম পাদপদ্মের নখমণিচন্দ্রিকাদ্বারা যাঁহার হৃদয়ের তাপ দূর হইয়াছে, তাহার আর দুঃখ কি? সূর্যতাপতপ্ত ব্যক্তি দিবাবসানে চন্দ্রকিরণ পাইলে তাহার কি আর তাপক্লেশ থাকে?’।

Page execution time: 0.0483431816101 sec