কৃষ্ণবিস্মৃত বহির্মুখ জীবের গর্ভবাসাদি ক্লেশ-বর্ণন—
জগতের পিতা–কৃষ্ণ, যে না ভজে বাপ।
পিতৃদ্রোহী পাতকীর জন্মজন্ম তাপ॥
কৃষ্ণ হইতেই চেতন জীব-জগৎ ও অচেতন জড়-জগৎ উদ্ভূত হয় বলিয়া কৃষ্ণই সমগ্র বিশ্বের একমাত্র জনক। কৃতজ্ঞপুত্রের যেরূপ জনকের আনুগত্য ও পূজনই একমাত্র ধর্ম বা কর্তব্য কর্ম, তদ্রূপ প্রত্যেক জীবের, বিশেষতঃ মানবের কৃষ্ণপাদপদ্মকেই সর্ববিশ্বসর্গের মূল-জনক অর্থাৎ আকর-চেতন জানিয়া তাঁহাকেই নিত্যকাল আনুগত্যের সহিত ভজন কর্তব্য। যে সকল জীব আত্মস্বরূপজ্ঞানে বঞ্চিত হইয়া সর্বলোক-পিতামহ পদ্মযোনিরও জনক মূল-নারায়ণ কৃষ্ণের প্রতি ভক্তিরহিত হয়, সেই সকল অকৃতজ্ঞ পুত্রস্থানীয় জীব নানা প্রকার সংসার-ক্লেশ লাভ করে। তাদৃশ অকৃতজ্ঞ, ধর্মোল্লঙ্ঘনকারী অপরাধী পুত্ররূপিজীবগণের দণ্ডস্বরূপ সংসারে আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও আধিদৈবিক—এই ত্রিবিধ তাপের ব্যবস্থা আছে।
(ভাঃ ১১/৫/৩ শ্লোকে বিদেহরাজ নিমির প্রতি নবযোগেন্দ্রের অন্যতম শ্রীচমসমুনির উক্তি—)
“য এষাং পুরুষং সাক্ষাদাত্মপ্রভবমীশ্বরম্।
ন ভজন্ত্যবজানন্তি স্থানাদ্ভ্রষ্টাঃ পতন্ত্যধঃ॥”
অর্থাৎ, ‘এই চারি বর্ণাশ্রমীর মধ্যে যে সকল ব্যক্তি সাক্ষাৎ নিজ-পিতা ঈশ্বরকে ভজন করে না, পরন্তু অবজ্ঞা করিয়া থাকে, তাহারা স্থানভ্রষ্ট হইয়া অধঃপতিত হয়।