পুত্রবধূ-দ্বারা উদাসীন-পুত্রের গৃহাসক্তিবর্ধন-চেষ্টা,
কৃষ্ণবিরহাক্রান্ত প্রভুর বৈরাগ্য ও ঔদাসীন্য—
লক্ষ্মীরে আনিঞা পুত্রসমীপে বসায়।
দৃষ্টিপাত করিয়াও প্রভু নাহি চায়॥
লক্ষ্মীরে অর্থাৎ বিষ্ণুপ্রিয়া-দেবীকে। নিমাইর কৃষ্ণেতরবিষয়ে ঔদাসীন্য দেখিয়া জননী শচীদেবী পুত্রের সংসারবন্ধনবর্ধক সংসার-প্রিয়া সাধারণ মাতৃগণের লৌকিক-বিচারের অভিনয় করিয়া মনে করিলেন, “বধূ শ্রীবিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর সহিত আলাপাদির সুযোগ করিয়া দিলে পুত্রের সংসার-বিরুদ্ধ তীব্র কৃষ্ণভজনানুরাগ-চেষ্টা বো ধ হয় কিঞ্চিৎশ্লথ হইয়া পড়িবে। সাধারণ লৌকিকবিচারে যৌবনকালে বদ্ধ-জীবগণ যোষিৎ ও ভোগ্য-বুদ্ধিতে স্বীয় জায়াকে ভোক্তৃঅভিমানে ভোগ করিতে করিতে সংসারাসক্ত ও গৃহমেধী হইয়া পড়ে, কিন্তু প্রভুর পক্ষে সেই বিচার আদৌ উপস্থিত হয় নাই। তিনি স্বীয় লক্ষ্মীর প্রতি অত্যন্ত উদাসীনভাবে সামান্য কটাক্ষপাত করিয়াও, কৃষ্ণবিরহ-ক্লিষ্ট আশ্রয়াভাববিভাবিত হইয়া কৃষ্ণপ্রেম-বিহ্বলতা-নিবন্ধন মূর্তিমতী দাস্যবিগ্রহ বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীকে পর্যন্ত বিষয়-বিগ্রহস্বরূপে দর্শন করিবার জন্য উৎসাহান্বিত হইলেন না।