ধাতুদ্রব্য পরশিতে নাহি সন্ন্যাসীরে।
সোনা রূপা মুক্তা সে তাঁহার কলেবরে।
প্রাকৃত-সহজিয়াগণ বলেন, বর্তমানকালে শ্রীরামকৃষ্ণদাস ধাতুদ্রব্য গ্রহণ না করিয়া তুর্যাশ্রমীর সম্মান রক্ষা করিয়াছেন। ভক্ত-সন্ন্যাসীর শ্রীনিত্যানন্দের ন্যায় স্বর্ণরৌপ্য ব্যবহার কর্তব্য নহে। বৈধ বিবিক্ত সন্ন্যাসীর আদর্শ উহাতে দোষযুক্ত হয়-- ইহাতে সন্দেহ নাই সত্য; কিন্তু অন্তরে পরমহংসাভিমান রাখিয়া বাহিরে যদি ধাতুদ্রব্যাদি গৃহীত না হয়, তাহা হইলে অন্তরে প্রতিষ্ঠাশা বিরাজ করে এবং লোক প্রতারণাকল্পে তাদৃশ আচার হীনাধিকার-জ্ঞাপক মাত্র।
লোকে নিন্দা করিবে বলিয়া যাত্রা-মহোৎসব প্রভৃতিতে ধাতুদ্রব্য-গঠিত শোভাযাত্রা প্রভৃতি উঠাইয়া দিয়া ভগবানের সেবা বিষয়ে দরিদ্রতা-দেখাইলে আধ্যক্ষিক পরোপকারি সম্প্রদায় বিপথগামী হইয়া “আরাধনানাং সর্বের্ষাং” শ্লোকের অর্থ হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিবে না। আধুনিককালে কাষায়-কৌপীন পরিত্যাগপূৰ্বৰ্ক রেশমী-বস্ত্র-ব্যবহার ও চন্দন-মালাদি-গ্রহণ যদি কোন ব্যক্তিকে বিপথগামী করিয়া তুলে, তাহা হইলে পরমহংসাচারের কপটতায় তাঁহার সর্বনাশ ঘটিবে। আর যদি স্বাভাবিক প্রতিষ্ঠাশা রাহিত্য ক্রমে শ্রীপুন্ডরীকবিদ্যানিধি শ্রীরামানন্দরায় ও শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর আদর্শের কোন অংশ পরমহংসাচারে অবস্থিত ভক্তবরে। দৃষ্ট হয়, তাহা হইলে তাহা প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তি বুঝিয়া লইতে পারেন। ভাগ্যহীন ব্যক্তি বৈষ্ণবে প্রাকৃত দর্শনে অপরাধ সঞ্চয় করিয়া ফেলে।