তথাপিত এই কৃপা কর ‘গৌরহরি।
নিত্যানন্দ-সঙ্গে যেন তোমা’ না পাসরি।
শ্রীগুরুতত্ত্ব নিত্যানন্দ; সেই কৃষ্ণাভিন্নবিগ্রহকে যে পাষণ্ডী বিদ্বেষবুদ্ধিতে গ্রহণ করে, সেই পাষণ্ডীর সঙ্গিগণের সহিত কোন প্রকার সম্বন্ধ রাখা ভগবদ্ভক্তের কর্তব্য নহে। অসৎ-সঙ্গ-প্রভাবে শ্রীগুরুপাদপদ্মে সেবাধিকার শ্লথ হইয়া পড়ে, সুতরাং শ্রীগৌরসুন্দরের ঐকান্তিক নিত্যসেবক ও শ্রীগৌরসুন্দরের অভিন্ন কলেবর শ্রীগুরুদেবের স্মৃতি যাহাতে বিপর্যস্ত না হয়, তদ্রূপ বিচারে ইহকালে ও পরকালে অবস্থিত হওয়া আবশ্যক। যাহারা পরমার্থকে প্রাকৃত প্রয়োজনে পরিণত করে, তাহারা ভোগের দাস, ভক্ত নহে। ভক্তব্রুব ও ভক্ত—সম্পূর্ণ বিপরীত-ধর্মবিশিষ্ট। তজ্জন্য অসৎসঙ্গিগণকে পরমার্থ-সম্মিলনের সদস্য জ্ঞান করা-ভাগ্যবিপর্যয়ের কথা। সর্বনাশ উপস্থিত হইলে জীব পরমার্থ বঞ্চিত হইয়া শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যের প্রকাশবিগ্রহ শ্রীনিত্যানন্দকে ও তদভিন্ন প্রকাশ শ্রীগুরুদেবকে পৃথক্ জ্ঞান করে। তাহাদের গৌরসুন্দরের সেবা লাভ কখনও হয় না, তাহারা নিত্যকাল গুরুদ্ৰোহী হইয়া দুর্ভোগী হইয়া পড়ে। অধুনাতন শ্রীগৌড়ীয় মঠের বিরোধী কৈতবপূর্ণ ভক্তব্ৰুব-সম্প্রদায় যে পথে চলিতেছেন, তদ্দ্বারা তাহারা অমঙ্গল আবাহন করিবেন। তজ্জন্য ভক্তগণ তাহাদের ভাবী অমঙ্গল দেখিয়া নিতান্ত দুঃখিত।
ইতি ‘গৌড়ীয়-ভাষ্যে’ ষষ্ঠ অধ্যায় সমাপ্ত।