সর্বতন্ত্র-স্বতন্ত্র বলদেব-নিত্যানন্দ —
মদিরা যবনী যদি নিত্যানন্দ ধরে।
তথাপি ব্রহ্মার বন্দ্য কহিল তোমারে।”
শ্রীগুরুবৈষ্ণব-চরণে যাঁহার প্রেমাধিক্য, তিনিই ভগবানের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র। শ্রীগুরুবৈষ্ণবের চরণে প্রীতিরহিত ব্যক্তির কৃষ্ণপ্রসাদ লাভ করা সম্ভবপর নহে। মানবপ্রেম ও বদ্ধজীবসেবা কখনও ভগবানের প্রেম আকর্ষণ করিতে সমর্থ নহে।। শ্রীগুরুবৈষ্ণবের সেবা-প্রভাবেই জীবের বদ্ধজ্ঞান অপসারিত হয়। শ্রীগুরুপাদপদ্ম মন্ত্র দিয়া যে কৃষ্ণসম্বন্ধ-জ্ঞান বদ্ধজীবগণের কর্ণে প্রদান করেন, তদ্দ্বারা তাঁহারা শ্রীহরিরুবৈষ্ণবে প্রীতিম্পন্ন হইয়া নিত্য সেবা বিধান করেন। জড়ের ভোগময় আপেক্ষিকতা তাঁহাদিগকে আক্রমণ করিতে পারে না। গুরুব্রুবের সম্বন্ধে বা ভগবানের সম্বন্ধে ভ্রান্তধারণাকে মূল আশ্রয় জ্ঞান করিয়া দুষ্কৃতিসম্পন্নের যে রুচি উৎপন্ন হয়, সেই রুচি নিত্য সত্য হইতে সম্পূর্ণ পৃথক্ ও বিবর্তমাত্র। তজ্জন্যই শ্রীগৌরসুন্দরের ত্রিসত্য বাক্য। কপট গুরুব্রুব যদি ভগবানের এই শিক্ষা বিকৃতভাবে গ্রহণ করিয়া নিজেন্দ্রিয়-তর্পণের উপায় নির্ধারণ করে, তাহা হইলে সেই গুরুব্রুব শিষ্যগণ-সহ অনন্ত নরকে পতিত হয় এবং উহা হইতে উভয়েই আর ফিরিয়া আসে না।
ইতি শ্রীচৈতন্যভাগবতে অন্ত্যখণ্ডে নিত্যানন্দ-মাহাত্ম্য বর্ণনং নাম যষ্ঠোহধ্যায়ঃ।