কখনও গঙ্গার পরপার কুলিয়ায় গমন—
খানচৌড়া বড়গাছি আর দোগাছিয়া।
গঙ্গার ওপার কভু যায়েন কুলিয়া।
খানচৌড়া—পাঠান্তরে, “খালাছাড়া”, কেহ কেহ বলেন, খানাজোড়া খানাচৌতা একডালাই ‘খানাচৌড়া’ বলিয়া অভিহিত হইয়াছে। ‘খালাছাড়া’ বলিতে প্রাচীন নদীর খাদ, ছাড়ি-খাদ ও বুজান গঙ্গা বা খাল প্রভৃতি বুঝায়। বড়গাছি—এই গ্রাম অদ্যাপি বর্তমান এবং ‘কালশির খাল’, রুকুনপুর প্রভৃতি গ্রামের নিকটবর্তী। এই গ্রামে শ্রীনিত্যানন্দের শ্বশুরালয় অবস্থিত ছিল।
দোগাছিয়া—কৃষ্ণনগরের নিকট দোগাছিয়া গ্রাম। সেখানে শ্রীনিত্যানন্দের জনৈক সেবকের বাস ছিল। শ্রীনবদ্বীপ— শ্রীগঙ্গার পূর্বপারে শ্রীমায়াপুরকে বুঝায়। কোলদ্বীপ বা কুলিয়া—গঙ্গার পশ্চিমপারে অবস্থিত। সকল বিজ্ঞগণের মতেই বর্তমান সহর নবদ্বীপ মহাপ্রভুর সময়ে ‘কুলিয়া’ নামে অভিহিত হইত। কুলিয়া-গ্রামের পূর্বতটে শ্রীমায়াপুর নবদ্বীপ। “সবে মাত্র গঙ্গা নদীয়ায় কুলিয়ায়”-—এই শ্রীচৈতন্যভাগবতোক্ত বাক্য হইতে নিজ শ্রীনবদ্বীপ মায়াপুর–গঙ্গার। পূর্বপারে চিরকালই বর্তমান এবং কুলিয়ার সংস্থান—পশ্চিমপারে চিরদিনই অবস্থিত ছিল ও আছে। এখনও প্রাচীন কুলিয়ার নিদর্শন স্বরূপ ‘কুলিয়ার গঞ্জ’ ‘আমাদকোল’, তেঘরির কোল’, ‘কুলিয়ার দহ’ প্রভৃতি সংজ্ঞা ন্যূনাধিক বর্তমান।