যদ্যপি অদ্বৈত কোটি-চন্দ্র-সুশীতল।
তথাপি চৈতন্য-বিমুখের কালানল।
শ্ৰীঅদ্বৈত-গৃহে বহু ঐশ্বর্য ও খাদ্যদ্রব্র্যের সমাবেশ দেখিয়া শ্রীগৌরসুন্দর অত্যন্ত প্রীত হইলেন এবং অদ্বৈতপ্রভুকে ও তদনুগ আচার্য-সম্প্রদায়কে এরূপভাবে পরমৈশ্বর্যের সহিত মহোৎসব করিতে উৎসাহ দিলেন। কিন্তু মৎসর প্রকৃতির জনগণ এইরূপ আড়ম্বরের সহিত সেবা করিতে গিয়া তাঁহাকে ঐশ্বর্যপ্রধান বিচারে নিজের নরকবাঞ্ছা করেন। আচার্যের মর্যাদা-লঙ্ঘনপূর্বক তাহার নিজ মাধুর্যান্বেষণে যে বাহ্য ঐশ্বর্য প্রদর্শন, তাহা নির্বিশেষবাদীর বিচারে পুষ্ট হইতে পারে উহা গৌরসুন্দরের ও ভক্তগণের বিচারসম্মত নহে। ভগবদ্ভক্তগণ—সাক্ষাৎ ভগবদ্বিদ্বেষী ও ভক্ত-বিদ্বেষী জনগণের অগ্নি ও যম-সদৃশ।
যে-কালে গৌড়ীয়মঠের উৎসব, শোভাযাত্রা ও নানা প্রকার আড়ম্বর জীবের একমাত্র কল্যাণের জন্য অনুষ্ঠিত হইয়াছিল, সেকালে পাপিষ্ঠ সহজিয়া-সম্প্রদায় কুলিয়াবাসী অপসম্প্রদায়ের মৎসরধর্মে দীক্ষিত হইয়া গৌড়ীয় মঠের সেবকগণের কার্যে বৈষম্যপূর্ণ সমালোচনা করিতে গিয়া নিজ নিজ অমঙ্গল সাধন করিয়াছেন। এই চৈতন্যবিমুখ জনগণ আচার্যের ক্রিয়াকে সাক্ষাৎ পাপদহনকারী অগ্নি জানিয়া “বাবারে, মারে” ডাক ছাড়িয়াছিলেন।