এই মত পরানন্দরসে ভক্তগণ।
সবেই করেন কার্য যা’র যেন মন।
বিভিন্ন ভক্তগণ অদ্বৈত-গৌরমিলন-মহোৎসবে শ্রীল মাধবেন্দ্রের আবাহন-তিথি-পূজায় নিজ নিজ কৃত্য প্রদর্শন করিতে লাগিলেন। অধুনাতন কৃত্রিম মহোৎসব-কালে যাঁহারা ভগবৎসেবায় আলস্য করিয়া সেবাভারগ্রহণের পরিবর্তে ভোজনরসাস্বাদনে দিনপাত করেন, তাঁহারা শ্রীচৈতন্যভাগবতের এই অংশ পাঠ করিলেই জানিতে পারিবেন যে, গৌরসুন্দর, নিত্যানন্দ ও অদ্বৈত প্রভুর মহোৎসব কর্মীর যাত্রা-উৎসবের ন্যায় আত্মেন্দ্রিয়তর্পণ-মাত্র নহে। শ্রীগৌড়ীয়মঠ অবৈষ্ণবোচিত মহোৎসবের আদৌ প্রশ্রয় দেন না। গৌড়ীয়মঠ প্রাণযুক্ত সজীব ভক্তগণের দ্বারাই সর্বতোভাবে মহোৎসব সম্পাদন করেন। কিন্তু অর্বাচীন-সম্প্রদায় বলে যে মহোৎসবকারী সজীব প্রাণ বিগত আশঙ্কা করিয়া ভাবীকালে প্রাণহীন যজ্ঞের জন্য অর্থ সঞ্চিত রাখা সর্বতোভাবে কর্তব্য। যে কালে গৌড়ীয়মঠের প্রচারকনামধারিগণ সঞ্চিত অর্থ ভোগ করিবার চেষ্টায় জড়ভোগপরায়ণ কর্মীর ন্যায় চেষ্টাবিশিষ্ট হইবেন, তাঁহাদের সেইকালের জন্য সঞ্চিত অর্থ এখন হইতেই সংরক্ষণ করা আবশ্যক। গৌড়ীয়মঠের সজীবপ্রাণযুক্ত জনগণ এইরূপ প্রাণহীন অর্থের সঞ্চয়কারী নহেন। তাঁহারা বলেন, যে কালে প্রচারকসম্প্রদায় প্রাণহীন হইয়া উহার ভার ভাড়াটিয়াগণকে দিবেন, সে কালে ভাড়াটিয়াগণের অর্থের প্রাচুর্য থাকিলে তাহারা সেবা করিবার পরিবর্তে ভোগী হইয়া যাইবেন। সুতরাং নরকে যাইবার জন্য কর্মী ও জ্ঞানীর তাৎপর্য উহারা গ্রহণ করিতে প্রস্তুত নহেন।