শ্রীঅদ্বৈতাচার্যের মাধবেন্দ্রপুরীর উপদেশ-গ্রহণ-লীলা —
তাঁ’র ঠাঞি উপদেশ করিলা গ্রহণ।
হেনমতে মাধবেন্দ্র-অদ্বৈত মিলন।
ভক্তির পূর্ণমাত্রা প্রকটিত দেখিয়া শ্রীমাধবেন্দ্রপুরীর নিকট শ্রীঅদ্বৈত প্রভু মন্ত্র ও ভজনোপদেশসমূহ গ্রহণ করিলেন। অদ্বৈত হৃদয়ে যে আশা মুকুলিত হইবার চেষ্টা দেখা যাইতেছিল, তাহাই এবার বিকশিত হইবার সুযোগ হইল। অনেকে মনে করেন, —মন্ত্রের উপদেশ কৌলিক গুরু হইতেই লওয়া উচিত তাঁহার কৃষ্ণভক্তি আছে কিনা সে বিচার করা নিষ্প্রয়োজন অথবা যাহারা আত্মপ্রতিষ্ঠা-লাভের জন্য কৃতপ্রযত্ন হইয়া করতালি বাদ্যের সঙ্গে সঙ্গে অষ্টসাত্ত্বিক বিকারের ছলনা দ্বারা লোক প্রতারণা করে,
তাহাদিগকে ভক্তরাজ জানিয়া কৃত্রিম ভক্তি শিক্ষা করিলে তাহাদের মঙ্গল-লাভ ঘটিবে। কিছুদিন পূর্বে রসুন কণ্ঠদেশে রাখিয়া শরীরকে উষ্ণ করিবার প্রক্রিয়াকে বা হস্তে লঙ্কা মাখিয়া চক্ষে ঘষিবার প্রক্রিয়া দ্বারা অশ্রুমোচনকে ভক্তির অঙ্গ এবং তাদৃশ উপদেশ দ্বারা নিরন্তর কপটতা করিয়া পান্সে চক্ষু হইতে অশ্রু-নিঃসরণ পূর্বক জড়ভাবে বিভাবিত কপট ব্যক্তিকে মাধবেন্দ্রপুরীর সমজাতীয় জ্ঞানে যে অপ-উপদেশ-প্রথা ভাগ্যহীন লোকের হৃদয়দেশ অধিকার করিয়াছে, তাহা হইতে উহাদিগকে মুক্ত করিবার জন্যই অদ্বৈতচরণাশ্রিত জনগণ মাধবেন্দ্রর কনক-কামিনী-প্রতিষ্ঠাশাবর্জিত সাত্ত্বিক ভাবসমূহের যথার্থ অনুসন্ধান ও অনুসরণ করিয়া থাকেন। শ্রীগৌড়ীয়মঠ কোন প্রকার কপটতার প্রশ্রয় দেন না। সুতরাং তাঁহার নিষ্কপট সেবকগণ শ্রীল মাধবেন্দ্রপুরীর অনুগত ও প্রতারণা-নিবারণকারী উপদেশক।