শঙ্করাচার্যের হৃদগত উদ্দেশ্য কৃষ্ণদাস্য, অপর উক্তি অসুরমোহনপরা—
যদি বল শঙ্করের মত সেহ নহে।
তাঁ’র অভিপ্রায় দাস্য, তাঁ’রি মুখে কহে।”
শঙ্করাচার্য সর্বতোভাবে কৃষ্ণভজনই যে জীবের নিত্য ধর্ম—এইরূপ কথা বলেন নাই, তথাপি তিনি আপনাকে সমুদ্রের তরঙ্গ বিচার করিয়াছেন; তরঙ্গ সমুদ্র নহে, ইহাই তাঁহার মত। মর জগতের ভেদ বা মায়াবদ্ধতা স্তব্ধ হইলেই মুক্তি হয় না অন্যথারূপের পরিহারই স্বরূপে অবস্থান বা মোক্ষ। সুতরাং কোন কোন স্থলে শঙ্করের মতেও ভক্তিবিরোধ দেখা যায় না। শঙ্করের অনুগত জনগণ তাঁহার নিজ অভিপ্রায় বুঝিতে না পারিয়া বাহিরের বেষ লইয়াই আপনাকে মুক্ত অভিমান করেন।
সন্ন্যাসের একমাত্র তাৎপর্য তাহাই। প্রকৃতপক্ষে বাহিরের শিখাসূত্রের ত্যাগও ভক্তির কারণ নহে। একদণ্ড-গ্রহণপূর্বক শিখাসূত্র ত্যাগ ভক্তির কারণ নহে। একদণ্ড-গ্রহণপূর্বক ত্যাগ অপেক্ষা ত্রিদণ্ডিভক্তের বিচার গ্রহণ করিলে কৃষ্ণভক্তি উজ্জ্বল হয়। শ্রীগৌরসুন্দর সার্বভৌমের এই সকল কথা শুনিয়া বিশেষ আনন্দিত হইলেন।